শেষ মুহূর্তে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়ে চলছে বইমেলার প্রস্তুতি

শেষ মুহূর্তে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়ে চলছে বইমেলার প্রস্তুতি

‘পড়ো বন্ধু গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রতিবছরের মতো এবছরও ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা। মেলা শুরু হতে বাকি মাত্র দুইদিন। হাতে সময় কম থাকায় বিরতিহীনভাবে চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার কাজ।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সরেজমিনে বইমেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি চত্বর দুই অংশেই বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টলের অবকাঠামো তৈরি ও সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। বেশিরভাগ স্টলের অবকাঠামো তৈরি হয়ে গেলেও প্রতিটি স্টলেই চলছে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার কাজ।

বইমেলায় স্টল নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজে নিয়োজিত কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্যান্য বছর থেকে স্টল নির্মাণে এবার তারা সময় কম পেয়েছেন। সময় মতো তাই কাজ সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়ে বিরতিহীন কাজ করছেন তারা। 

সময় কম পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে তড়িগড়ি করে চলছে স্টলের কাজ 


গোপালগঞ্জ থেকে বইমেলায় স্টলের সাজসজ্জার কাজ করতে আসা মতিউর রহমান শেখ বার্তা২৪-কে জানান, ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ হইয়া গেলে কাজ করার অনুমতি নাই। যা করার ৩১ তারিখের মধ্যেই করতে হইবো। প্রত্যেকটা স্টলেই সবাই লোক বাড়াইয়া নিয়া কাজ করতাছে, যাতে সময়মতো কাজ শেষ করন যায়। আমরা কোনো বিরতি না দিয়া রাইত-দিন একলগে কইরা কাজ করতাছি, সময়ের আগে কাজ শেষ হইবোই ইনশা-আল্লাহ।

মেলা প্রাঙ্গণ জুড়েই শুধু হাতুড়ি দিয়ে পেরেক ঠোকার শব্দ। মতিউরের কথা অনুযায়ী মেলা প্রাঙ্গণের প্রতিটি স্টলেই দেখা গেল ৬ থেকে ৮ জন করে শ্রমিক কাজ করছে। কেউ বসে নেই। কেউ মাপ অনুযায়ী কাঠ কাটছেতো কেউ কাঠের অবকাঠামো তৈরি করছে। কেউ স্টলের আসবাবপত্র রং করছে কেউ আবার বৈদ্যুতিক সংযোগের কাজ করছে। এত পরিশ্রমের মধ্যেও প্রত্যেকটি শ্রমিকের মুখে হাসি। এর কারণ হল, বই মেলায় কাজ করতে নাকি তাদের ভালো লাগে। তাদের ভাষায়, শুধু টাকার জন্য না, টাকা তো অন্য জায়গায় কাজ করলেও পাওয়া যায়। কিন্তু এখানে কাজ করতে ভেতর থেকে আনন্দ আসে। 

শ্রমিকদের সাথে কথা বলা শেষ করে মেলার মাঠে ঘুরতে ঘুরতে কথা হয় ‘বলাকা প্রকাশন’ এর প্রকাশক শরীফা বুলবুলের সাথে। ২০২৪ এর বইমেলা অন্যান্যবারের থেকে অনেক বেশি জমজমাট হবে উল্লেখ করে মেলায় স্টলের প্রস্তুতি নিয়ে তিনি জানান, সময় একটু বেশি পেলে ভালো হত। কষ্ট হলেও আশা করি সময়মতই কাজ শেষ করতে পারব। কারণ সবাই মিলে রাত-দিন এক করে কাজ করছি। এই কষ্ট আর কষ্ট থাকবে না যদি পাঠকদের আশানুরূপ সাড়া পাই। অন্যান্যবার রোগবালাই আর বিভিন্ন কারণে সেভাবে সাড়া না পেলেও এবার সবকিছুই ঠিক আছে। যেকারণে পাঠকদের উপস্থিতিও এবার ভালো হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

বাংলা অ্যাকাডেমির এক সূত্র থেকে জানা গেছে, ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় মাসব্যাপী বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বইমেলার উদ্‌বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেবেন অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। এ অনুষ্ঠানেই দেওয়া হবে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সাল অধিবর্ষ (লিপ ইয়ার) হওয়ায় এবারের বইমেলা হতে যাচ্ছে ২৯ দিনের। যা বইপ্রেমী, লেখক ও প্রকাশক সব পক্ষের জন্যই খুশির বটে।

Scroll to Top