ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি – ব্র্যাক ব্যাংকের ভৈরব শাখায় গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে তিন লাখ ৯০ হাজার টাকা উধাও হয়ে গেছে। ওই গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা ছিল ৯ লাখ ৯০ হাজার ৯০৩ টাকা। কিন্তু বর্তমানে তার অ্যাকাউন্টে রয়েছে মাত্র ৪৩ হাজার টাকা। বাকি পাঁচ লাখ টাকা তার পুরোনো একটি অ্যাকাউন্টে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
৮ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে ১৬টি লেনদেনের মাধ্যমে এ টাকা উত্তোলন ও সরিয়ে ফেলা হয়। মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদানকারী দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৫টি নম্বরে তিন লাখ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গ্রাহকের নামে বন্ধ একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা। এ অ্যাকাউন্টটি কয়েক মাস আগে বন্ধ করা হয়েছিল।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে শাহিদা আক্তার নামের ওই গ্রাহক ব্যাংকে লেনদেন করতে এসে দেখতে পান, তার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরে ব্যাংক হিসাবের আর্থিক বিবরণী (ব্যাংক স্টেটমেন্ট) তুলে দেখেন তার জমানো টাকা প্রায় শেষ। পরে স্টেটমেন্ট দেখে তিনি জানতে পারেন, তার আরেকটি পুরোনো অ্যাকাউন্টে পাঁচ লাখ টাকা জমা রয়েছে। ওই অ্যাকাউন্টে গত দুই বছর কোনো লেনদেন করেননি তিনি। বাকি টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরিয়ে নিয়েছে একটি চক্র।
ভুক্তভোগী গ্রাহক শাহিদা আক্তার রিপা বলেন, ‘সকালে আমি ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে দেখি আমার অ্যাকাউন্টে ৪৩ হাজার টাকা আছে। ২ জানুয়ারি চার লাখ টাকা জমা দেওয়ার পর আমার অ্যাকাউন্টে ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৯০০ টাকা থাকার কথা। পরে আমি ব্যাংক কর্মকর্তাদের জানালে তারা ব্যাংক স্টেটমেন্ট চেক করে দেখেন আমার বন্ধ থাকা একটি পুরোনো অ্যাকাউন্টে পাঁচ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে। আর তিন লাখ ৯০ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আমি এই ব্যাংকে টাকা লেনদেন করি। এমনটা হলে গ্রাহকরা ব্র্যাক ব্যাংকের প্রতি আস্থা হারাবে। আমি আমার উধাও হয়ে যাওয়া টাকা ফেরত পেতে চাই।’
ভুক্তভোগীর স্বামী জহির মিয়া বলেন, ‘আমি ব্যবসার কাজে দৌড়ঝাঁপ করি বলে আমার স্ত্রীকে দিয়ে লেনদেন করাই। আমার স্ত্রীর পুরোনো অ্যাকাউন্ট প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ। এই অ্যাকাউন্টে লেনদেন ছাড়া কীভাবে পাঁচ লাখ টাকা ঢোকে আমি এ বিষয়ে অবাক।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে ব্যাংকের কোনো এক কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। তা নাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব না। আমি আমার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টের টাকা ফেরত দিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ভৈরব শাখার ব্যবস্থাপক মো. শরীফ আল মাহমুদ জানান, গ্রাহকের অভিযোগ জানার পর আমরা জেনেছি ও দেখে বুঝতে পেরেছি, উনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হতে পারে। এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। বাকি টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রাহক যেহেতু টাকা উত্তোলন করেননি, আমার হেড অফিসে বিষয়টি জানিয়েছি। বিষয়টি তদন্তের পর মূল ঘটনার কারণ জানা যাবে।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ২৪ জানুয়ারি ২০২৪