আরবি হরফ লেখা পোশাক পরায় পাকিস্তানে এক কিশোরীকে জনসম্মুখে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরের এক রেস্তোরাঁয় আসা নারীটির পোশাকে আরবি ক্যালিগ্রাফি ছিল। পরে স্থানীয়দের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, সেখানে কোরাআনের আয়াত লেখা আছে। আর এতেই অল্প সময়ের মধ্যে অনেক বিক্ষুব্ধ লোক জড়ো হয়ে ওই নারীকে লাঞ্ছিত করেন।
এই ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, একটি রেঁস্তোরার এক পাশে দু’হাত দিয়ে মুখ ঢেকে একজন নারী বসে আছেন। আর সামনে বিক্ষুব্ধ জনতার ভিড়। যাদের কেউ কেউ চিৎকার করে তার ‘শার্ট’ খুলে ফেলতে বলছেন। কেউ কেউ বলছেন, যারা ব্লাসফেমি (ধর্ম অবমাননা) করে তাদের শিরশ্ছেদ করা উচিত।
পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় ৩০০ লোক সেখানে ভিড় করেছিল। সহকারী পুলিশ সুপার সাইয়েদা শেহরবানো বলেন, সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিলো ওই নারীকে নিরাপদে ওই জায়গা থেকে বের করে আনা। আমরা তাদের বলি, এই নারীকে আমাদের সাথে করে নিয়ে যাবো, তার কর্মকাণ্ড আইনিভাবে আমলে নেয়া হবে এবং দেশের আইন অনুসারে যদি তিনি কোনো অপরাধ করে থাকেন তবে অবশ্যই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে।
তিনি জানান, তাকে এরপর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন আলেমের মতামত নেয়া হয়। তারা নিশ্চিত করেন যে, পোশাকের লেখাটিতে আরবি ক্যালিগ্রাফিই ছিল তবে তা কোরাআনের আয়াত নয়। এরপর ওই নারী এক ভিডিও পোস্টে জানান, আমার এমন কোনো উদ্দেশ্য ছিল না, এটা ভুলবশত ঘটেছে। তারপরও যা ঘটেছে তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী, এবং আমি নিশ্চিত করব যে এটি আর কখনো হবে না।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনি কেনাকাটা করতে লাহোরে এসেছিলেন এবং দ্রুতই শহর ছেড়ে চলে গেছেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা তাহির মাহমুদ আশরাফি এক্স (টুইটার) পোস্টে লিখেছেন, ওই নারীর নয়, ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল ভিড়ের মধ্যে থাকা পুরুষদের।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে ব্লাসফেমির বা ধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এমনকি মামলার বিচারের আগেই পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনাও ঘটেছে দেশটিতে।