আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসে যোগ দিতে ও আইএসের সদস্যকে বিয়ে করতে ১৫ বছর বয়সে সিরিয়া গিয়ে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব হারানো শামীমা বেগমের আপিল খারিজ করেছেন আদালত।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আবেদন নাকচ করে দেন লন্ডনের আপিল আদালত। শামীমার আইনজীবীরা পাঁচটি যুক্তি তুলে ধরেছিলেন৷ সবগুলোই খারিজ করে দেওয়া হয়েছে৷
রায় দেওয়ার সময় বিচারক বলেন, ‘এই যুক্তি দেওয়া যেতে পারে যে, শামীমা বেগমের মামলায় দেওয়া সিদ্ধান্তটি কঠোর ছিল, এটিও যুক্তি দেওয়া যেতে পারে যে, তিনি নিজেই নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য দায়ী৷’
বিচারক আরও বলেন, ‘এই আদালতের কাজ উভয় দৃষ্টিভঙ্গির সাথে একমত হওয়া বা না হওয়া নয়। আমাদের একমাত্র কাজ হলো সিদ্ধান্তটি বেআইনি ছিল কিনা, তা মূল্যায়ন করা৷ আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত বেআইনি ছিল না এবং সেজন্য আপিল খারিজ করা হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
শামীমা চাইলে এখন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন৷
২০১৯ সালে সিরিয়ার এক শরণার্থী শিবিরে শামীমা বেগমের ছবি প্রকাশ হওয়ার পর তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল কর্তৃপক্ষ৷ এর বিরুদ্ধে গত অক্টোবরে আপিল করেছিলেন শামীমা৷ সিরিয়া গিয়ে শামীমা এক আইএস সদস্যকে বিয়ে করেছিলেন৷ তাদের তিন সন্তান হয়েছিল, কেউই বাঁচেনি৷
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার পর শামীমা বলেছিলেন, ‘‘তিনি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন৷ কিন্তু ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের একটি ট্রাইব্যুনাল রায় দেয় যে, তিনি রাষ্ট্রহীন নন। কারণ, যখন তার নাগরিকত্ব বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয় তখন বাংলাদেশি মায়ের কারণে তিনি ‘বংশসূত্রে বাংলাদেশের একজন নাগরিক’ ছিলেন৷’’ অবশ্য শামীমা ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাননি।
এরপর ‘স্পেশাল ইমিগ্রেশন আপিলস কমিশনে’ করা চ্যালেঞ্জ গতবছর হেরে যান শামীমা৷ তিনি বর্তমানে সিরিয়ার এক শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন৷
আইএস-এ যোগ দিতে প্রায় ৯০০ মানুষ ব্রিটেন থেকে সিরিয়া ও ইরাক গিয়েছিলেন৷ তাদের মধ্যে প্রায় দেড়শ জনের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে বলে সরকারি হিসেবে জানা গেছে৷