ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতায় সক্রিয় হয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ)। দিল্লির সাতটি আসনের মধ্যে তিনটি কংগ্রেসকে ছাড়ার জন্য আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল ‘বার্তা’ পাঠিয়েছেন বলে ‘ইন্ডিয়া টুডে’তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দাবি করা হয়েছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল বুধবার লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘দেখা যাক আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে কী হয়।’ তবে সমঝোতার বিষয়টি আরও আগে চূড়ান্ত হওয়া উচিত ছিল বলেও জানান তিনি।
কেজরিওয়ালের দলের পক্ষ থেকে বুধবারই তিন আসন ছাড়ার বার্তা কংগ্রেস হাইকমান্ডকে দেওয়া হয়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, দিল্লির আবগারি দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার আবার কেজরিওয়ালকে সমন পাঠিয়েছে ইডি।
গত জানুয়ারিতে কংগ্রেস এবং আপ নেতৃত্ব আসন সমঝোতা নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করলেও জট কাটেনি। সূত্রের খবর আপের পক্ষ থেকে দিল্লির সাতটি আসনের মধ্যে একটি বা দুটি ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, কংগ্রেস অন্তত তিনটিতে লড়ার দাবিতে অনড় থাকায় আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল।
কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে গঠিত আসন সমঝোতার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির অন্য চার সদস্য রাজস্থানের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ছত্তিসগড়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সালমান খুরশিদ এবং এআইসিসির সাবেক মুখপাত্র মোহন প্রকাশ ছিলেন বৈঠকে। সঙ্গে ছিলেন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দর সিং লাভলিও।
অন্যদিকে, আপের পক্ষে ছিলেন রাজ্যসভা সাংসদ সন্দীপ পাঠক এবং দিল্লির দুই মন্ত্রী অতিশী এবং সৌরভ ভরদ্বাজ অংশ নিয়েছিলেন জানুয়ারির আসন রফা আলোচনায়।
ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব, গুজরাট, আসাম, গোয়াসহ বিভিন্ন রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে একলা চলো বার্তা দিয়েছে আপ। ওই রাজ্যগুলোর কিছু আসনে একতরফা প্রার্থী ঘোষণাও করেছে তারা। কিন্তু, দিল্লিতে এখনও কেজরিওয়ালের দল একতরফা কোনও পদক্ষপ নেয়নি।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আপ শাসিত দিল্লির সাতটি আসনের সবগুলো আসনই জিতেছিল বিজেপি। তার মধ্যে পাঁচটি আসনেই কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে ছিল। যদিও ২০২০ সালে দিল্লির বিধানসভায় বেশির ভাগ আসনে জিতে কেজরিওয়াল ফের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।
গত বছর দিল্লির পৌরসভাও বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে আপ। এই পরিস্থিতিতে আপ এবং কংগ্রেসের জোট হলে দেশের রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা।