পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে যত নাটকীয়তা | চ্যানেল আই অনলাইন

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে যত নাটকীয়তা | চ্যানেল আই অনলাইন
Fresh Add Mobile

আগামীকাল ৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। নির্বাচনকে ঘিরে গত কয়েকমাস ধরেই নানান নাটকীয়তার সাক্ষী হয়েছে দেশটি। তবে সকল নাটকীয়তার পর্দা উন্মোচন করে এখন শুধু কিছু সময়ের অপেক্ষা।

নাটকের শুরু সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার মাধ্যমেই। শেহবাজ শরীফের ক্ষমতায় বসা, ইমরান খানকে গ্রেপ্তার, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের দেশ প্রত্যাবর্তন এবং প্রভাবশালী সেনাবাহিনীর সমর্থন আদায়, নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়াসহ গত কয়েকমাস ধরেই নানান ঘটনার জন্ম দিয়েছে দেশটি।

BkashBkash

২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় বসেন ইমরান। তবে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে মতপার্থক্য দেখা দিলে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান। গত বছরের মে মাসে দুর্নীতির অভিযোগে ইমরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিভিন্ন মামলায় কারাদণ্ডও দেওয়া হয় তাকে। ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর নির্বাচনী প্রতীক ক্রিকেট ব্যাটকে নিষিদ্ধ করা হয় নির্বাচনে। ফলে জনপ্রিয় এই দলটির প্রার্থীরা এখন স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন।

Reneta JuneReneta June

নির্বাচনে অংশ নিতে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ স্বেচ্ছা নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে আসেন। সমর্থন পান সেনাবাহিনীর। দেশটির ইতিহাস বলছে, দেশটির নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সমর্থন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার রাস্তা খুলে দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারের নির্বাচনে নওয়াজ শরিফই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।  ইমরান খান নির্বাচনে না থাকায় লড়াইটা হবে মূলত নওয়াজ শরিফ ও ভুট্টো পরিবারের সন্তান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি সাথে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল তরুণ সমাজে বেশ জনপ্রিয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নির্বাচন অনেকটাই এক তরফা হতে চলেছে। ইমরান খানকে নির্বাচনে আসতে দিচ্ছে না সেনাবাহিনী। কিন্তু নিষিদ্ধ হওয়া নওয়াজ শরীফকে দেশে ফিরে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সব সুযোগই দিচ্ছে। ভোট কতটুকু সুষ্ঠু হচ্ছে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই য়ায়। পাকিস্তানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত অজয় বিসারিয়া বলেছেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে কী হবে তা এখনই বলে দেয়া যায়। পাকিস্তানের সেনা আগে থেকে ঠিক করে রেখেছে কাকে তারা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চায় এবং সম্ভবত সেই মানুষটি হলেন নওয়াজ শরীফ। তাই ৮ ফেব্রুয়ারি যা হবে তা ইলেকশন না বলে সিলেকশন বা বাছাই করে নেয়া বলাটাই ভালো।

২৪ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৮০ লাখ। যাদের মধ্যে ৪৪ শতাংশ ভোটারের বয়স ৩৫ বছরের কম। ভোটারদের মধ্যে ৫৪ শতাংশ পুরুষ এবং বাকি ৪৬ শতাংশ নারী। ২৬৬টি আসনের বিপরীতে লড়ছেন ১৪টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ৫ হাজারেরও বেশি প্রার্থী।

এর আগে মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে মোতায়েন করা হয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, রেঞ্জার্স এবং পুলিশ। সম্ভাব্য সহিংসতা এড়াতে সারাদেশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

টানা তৃতীয়বারের মতো বেসামরিক সংসদে ভোট দিতে চলেছে দেশটির প্রায় ১৩ কোটি ভোটার। বহু আলোচনা, সমালচনা এবং নাটকীয়তায় জড়ানো এই নির্বাচনকে ঘিড়ে আগ্রহের কমতি নেই বহির্বিশ্বের। পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন দেখতে ১০০ জনের বেশি বিদেশি পর্যবেক্ষক অবস্থান করছেন দেশটিতে । মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, প্রতিবেশীদের সাথে বৈরী সম্পর্কসহ নানান সংকট দেশটির অভ্যন্তরে প্রবল আকার ধারণ করেছে। আগামী ৫ বছরের জন্য যেই দেশটির ক্ষমতায় বসতে চলেছেন তার জন্য পথটা যে খুব একটা মসৃণ হবে তা অনেকটাই নিশ্চিত।

Scroll to Top