চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) বর্ণাঢ্য আয়োজনে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। পরে সকাল সাড়ে ৮টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম চুয়েট পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর একে একে বিভিন্ন দপ্তরিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
‘জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডীন এবং রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন প্রকৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. এ এইচ রাশেদুল হোসেন, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘ডিসেম্বর মাস আমাদের অহংকারের মাস। আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার মাস। পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে হারিয়ে আমরা এই মাসে বিজয় লাভ করেছিলাম। আমি মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল বীর শহীদসহ চুয়েট ক্যাম্পাসে নিহতদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বিশেষ করে, মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চুয়েটের সাবেক ছাত্র শহীদ তারেক হুদা এবং শহীদ মোহাম্মদ শাহ এর আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ার অগ্রযাত্রায় আমরা আছি। নিজ নিজ অবস্থান থেকে উক্ত মিশনে আত্মনিয়োগ করতে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় প্রধানগণের পক্ষে ওয়াটার রির্সোসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. জি. এম. সাদিকুল ইসলাম, প্রভোস্টগণের পক্ষে শামসেন নাহার খান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রাজিয়া সুলতানা, স্টাফ ওয়েলফেয়ার কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দিন আহম্মেদ, শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম.কে. জিয়াউল হায়দার, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি জনাব সৈয়দ মোহাম্মদ ইকরাম, স্টাফ এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন, শিক্ষার্থীদের পক্ষে ইইই এর ‘১৮ ব্যাচের ছাত্র নাজমুল হাসান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান বিজয় দিবসের উপর প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন চুয়েট এর উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। এরপর বীর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন চুয়েট কেন্দ্রেীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ ক্বারী মাওলানা মো. নুরুল্লাহ।
বিজয় দিবসের অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল- শিক্ষক বনাম শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা বনাম কর্মচারীদের প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ, ছাত্র-ছাত্রীদের রচনা প্রতিযোগিতা, শিশুকিশোরদের দৌঁড় ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক গান, ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি।
এদিকে বাদ আছর মহান মুক্তিযুদ্ধে চুয়েটের দুই শহিদ শিক্ষার্থী শহীদ মোহাম্মদ তারেক হুদা ও শহীদ মোহাম্মদ শাহ-এর কবর জেয়ারত পরবর্তী মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত বীর শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করার কথা রয়েছে।