টাকা নিয়েছি প্রমাণ করতে পারলে পদত্যাগ করব – DesheBideshe

টাকা নিয়েছি প্রমাণ করতে পারলে পদত্যাগ করব – DesheBideshe

টাকা নিয়েছি প্রমাণ করতে পারলে পদত্যাগ করব – DesheBideshe

ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি – ভোটে ভরাডুবির পরে জাতীয় পার্টির নানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অর্থ লেনদেনের যে অভিযোগ এনেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সেটি প্রমাণিত হলে পদত্যাগ করবেন বলে জানালেন জাপা মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু৷

সোমবার বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন৷

চুন্নু বলেন, চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, বাংলাদেশের কোনো লোক যদি বলতে পারে, আমি বা চেয়ারম্যান কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছি দল বা দলের কারোর জন্য। তা প্রমাণ করতে পারলে আমি পদত্যাগ করব৷ চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, এগুলো গসিপিং।

অনেক নাটকীয়তার পরে জাপা এবার নির্বাচনে যায়৷ তার আগে জাপা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে ২৬টি আসনে ছাড় পায়৷ তবে ৭ জানুয়ারি ভোটের ফলে দেখা যায়, সমঝোতা হওয়া আসনগুলোর মধ্যে জাপা প্রার্থীরা মাত্র ১১টি আসনে জয়লাভ করেছেন।

সমঝোতার আসনগুলোর বাইরে থেকে জাপার যেসব প্রার্থী নির্বাচন করেছেন তারা অভিযোগ করেন, দলের শীর্ষ নেতাদের সিদ্ধান্তহীনতা ও নাটকীয়তার কারণে দলের ভরাডুবি হয়েছে৷

তারা বলেন, দলের অধিকাংশ নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিরোধিতা করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি শীর্ষ নেতারা৷ তাদের নির্বাচনের মাঠে নামিয়ে ‘বলি দেওয়া হয়েছে’ বলেও অভিযোগ করেন জাপার কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা।

এরই জেরে গত ১০ জানুয়ারি সেই বিক্ষুব্ধ নেতারা জাপার বনানী কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেন৷ তার রেশ ধরে গত রবিবার কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনেও বিক্ষুব্ধরা জরুরি সভা করেন। ওই সভায় জাপার ১২০ জন প্রার্থী অংশ নেন৷ তারা নির্বাচনকালীন সময়ে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে জাপার শীর্ষ নেতাদের কাছে জবাব চান৷

এ বিষয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আসলে অনেকে মনে করেছেন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের অনেক কথাবার্তা হয়েছে, ২৬টি সিট আমাদের ছেড়ে দিয়েছে৷ তারা বোধহয় আমাদের শত শত কোটি টাকা দিয়েছে। তাদের কেন টাকা দিই নাই, এটাই হলো তাদের মনের আসল ব্যথা৷ নির্বাচন যে ঠিকমত হয় নাই, তারা যে পাস করতে পারল না, এটা নিয়ে কোনো কথা নাই৷ সরকার যদি টাকা দিত, সেটা কি জানার বাকি থাকতো?

তিনি দাবি করে বলেন, সরকার টাকা দেয় নাই৷ শত শত কোটি টাকা হজম করার মতো মানুষ আমি না৷ বাংলাদেশে আমার নিজস্ব কোনো বাড়ি নাই৷ আর এত টাকা পেলে বিদেশে গিয়ে আরামে থাকতাম।

গত ১০ জানুয়ারি থেকে জাপায় বিক্ষোভে সামিল হওয়া প্রার্থীদের প্রসঙ্গে চুন্নু বলেন, এখানে এমন কজন লোক রয়েছেন, যারা জীবনে ৫০০ ভোটও পাবেন না৷ কেন তাদের নমিনেশন দিলাম? তারা নির্বাচন করতে চেয়েছে। আমরাও আসন খালি রাখতে চাই নাই৷ সেজন্য দিয়েছিলাম।

নির্বাচনে ভরাডুবির দায় স্বীকার করে জাপা মহাসচিব বলেন, একটা অভিযোগ ঠিক আছে৷ নির্বাচনে আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাইনি৷ সে বিষয়ে চেয়ারম্যান ও মহাসচিব হিসেবে আমার ওপর দায়িত্ব বর্তায়৷ কিন্তু এসব কথা তো আমরা ঘরে বসে বা দলীয় ফোরামে আলোচনা করতে পারতাম। আমরা ঠিক করেছিলাম, শপথের পর প্রেসিডিয়ামের সভা ডাকব, তারপর একে একে সব প্রার্থীর কথা শুনবো৷ কিন্তু তার আগেইতো তারা পলাশী বিপ্লবের মতো বিপ্লব শুরু করে দিয়েছেন।

জাপায় চলমান বিক্ষোভে কোনো একটি পক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করেন দলটির মহাসচিব৷ তবে কারা সেই পক্ষ তা এখন বলতে নারাজ তিনি।

চুন্নু বলেন, মনে হয় বাইরে থেকে কারো ইন্ধন আছে দলকে দুর্বল করার জন্য৷ তাদের ইন্ধনের কারণে দলে এ সমস্ত কথাবার্তা চলছে৷ নয়তো কোনো যুক্তি দেখি না।

জাপায় বিক্ষুব্ধ নেতারা বলেছেন, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু ও অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া দলের পদপদবি দখল করে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বিপথে পরিচালিত করছেন৷

এর জবাবে চুন্নু বলেন, পদপদবি দখল করে আমি কী করব! আমার তা দরকার নাই৷ আমার দরকার হলো এলাকার ভিত্তি, সেটি আমার আছে৷ আর দলের সব সংসদ সদস্য ও দুজন বাদে বাকি সব প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচনে অংশ নিতে চেয়েছিলেন৷ চেয়ারম্যান দেশ ও দলের প্রয়োজনে নির্বাচনে গিয়েছেন৷ আমার একার কথায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নেবেন? গোলাম মোহাম্মদ কাদের কী এতই কাঁচা মানুষ।

সূত্র: ঢাকাটাইমস
আইএ/ ১৫ জানুয়ারি ২০২৪

Scroll to Top