চিকিৎসকদের ১০ দিনের বিশ্রাম উপেক্ষা করে কপাল ও নাকে সেলাই অবস্থায় কলকাতার গার্ডেনরিচের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার (১৮ মার্চ) সকালে দেখা যায়, মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান মমতা। সরু গলি দিয়ে বেশ খানিকটা হেঁটে ঘটনাস্থলে যান তিনি। ঘটনাস্থলে গিয়েছেন কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের সাংসদ মালা রায়ও। রয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গয়াল।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর মমতা বলেন, ‘এটা খুব ঘিঞ্জি এলাকা। মন্ত্রীরা সারারাত এখানে ছিলেন। প্রোমোটারদের একাংশ বেআইনি ভাবে বাড়ি তৈরি করেন। তার আগে ভাবা দরকার, আশপাশে যারা আছেন, তাদের যাতে ক্ষতি না হয়। আমি শুনলাম, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই বহুতলটি তৈরি করা হয়নি। এখন রমজান মাস চলছে। সকলে উপোস করে থাকেন। তা-ও সারারাত এলাকার মানুষ উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন। স্বাস্থ্য দপ্তর, দমকল, পুলিশ, কাউন্সিলররা সারা রাত ধরে কাজ করেছেন।’
মমতা যোগ করে বলেন, ‘আমরা মর্মাহত। দু’জন মারা গিয়েছেন। পাঁচ-ছয়জন এখনও আটকে। এক জনের পা আটকে। তবে তিনি বেঁচে আছেন। উদ্ধারকারীদের ভিতরে ঢুকতে সময় লেগেছে। এখন সকলে ঢুকে গিয়েছেন। শোকস্তব্ধ পরিবারের কাছে আমি দুঃখপ্রকাশ করছি। যারা বেআইনি কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। পরিবারের পাশে সরকার দাঁড়াবে। যাদের বাড়ি ভেঙেছে, তৈরি করে দিতে বলব।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর হাসপাতালেও যান মমতা। সেখান থেকে বেরিয়ে বলেন, ‘হাসপাতালে যারা আছেন, তারা স্থিতিশীল।’
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গয়াল বলেন, ‘রাত থেকেই উদ্ধারকাজ চলছে। আশা করছি দ্রুত সকলকে বার করা যাবে।’
গার্ডেনরিচের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু-জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও পোস্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার সকালে মমতা এ বিষয়ে এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, আমি তাতে শোকাহত। আমাদের মেয়র, দমকলমন্ত্রী, পুলিশ কমিশনারের সেক্রেটারিয়েট, সিভিক পুলিশ, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল সারা রাত ধরে ঘটনাস্থলে রয়েছেন। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।’
ওই পোস্টেই মমতা আরও লেখেন, ‘মৃতদের পরিবারকে এবং আহতদের আমরা ক্ষতিপূরণ দেব। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশেই আছি। উদ্ধারকাজ চলছে।’
এর আগে ঘটনাস্থল থেকে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, মৃতদের পরিবারপিছু পাঁচ লক্ষ টাকা এবং আহতদের এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বহুতলটি যে বেআইনিভাবে তৈরি করা হচ্ছিল, তা তিনি মেনে নিয়েছেন। প্রোমোটারকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।