চট্টগ্রাম বন্দরে ২ দিনে পেঁয়াজ এলো ২২৬ টন

চট্টগ্রাম বন্দরে ২ দিনে পেঁয়াজ এলো ২২৬ টন

ফেনীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে সোনাগাজীর মুহুরি প্রকল্পের রেগুলেটরের গেটগুলো বন্ধ থাকায় মুহুরি নদীতে স্বাভাবিকের চাইতে বেশি পানি থাকায় বেশ কয়েকটি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা কার্যকর না থাকায় পানির নিচে ডুবে গেছে জেলার ২৯ হেক্টর জমির আমন ধানের ফসল। এতে ১২৮ মেট্রিক টন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

কৃষকরা আশঙ্কা করছেন এবারের আমন ধান, মৌসুমি বিভিন্ন শাকসবজিসহ ফসলের ক্ষতি ছড়াতে পারে প্রায় অর্ধকোটি টাকা। এছাড়াও পানির কারণে রবিশস্য চাষ করতে না পারায় দুশ্চিন্তায় সাধারণ কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, ফেনীতে এবার আমন মৌসুমে ৬৬ হাজার ৭১৪ হেক্টর আমান রোপণ হয়েছে। তবে ২৮ দশমিক ৯৫ হেক্টর জমির ১২৮ মেট্রিক টন ফসল ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ফসল ক্ষতিসাধিত হয়েছে। এদিকে জমি থেকে পানি সরে না যাওয়ায় রবিশস্য- গম, ভুট্টা, সরিষাসহ ডাল জাতীয় ফসল ও অন্যান্য ফসলাদি বুনতেও বিলম্ব হচ্ছে। এতে করে খাদ্য ভান্ডারে ঘাটতি দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর, কাজিরবাগ, মোটবী, সোনাগাজী উপজেলা, ছাগলনাইয়ার শুভপুরসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে এবারের আমন ধানে বেশ ক্ষতিসাধিত হয়েছে। এ সময় পানিতে নুয়ে পড়েছে আমন ধান। জেলার বিভিন্ন উপজেলার ফসলি জমির ধান কৃষক ঘরে তুলতে পারবে কিনা এনিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। কৃষকরা বলছে, বীজ, সার ও শ্রমিকের মজুরি দিয়ে প্রতি একরে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে তার তিন ভাগের একভাগও উঠবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ আছে।

এদিকে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড মুহুরি সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ না নেয়ায় জমির ফসল ধান খেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে দুষছেন স্থানীয় কৃষকরা।

ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুল হক রিপন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির পরে শুধু সচেতনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে ফসল নিমজ্জিত হয়ে থাকায় ধানতো শেষ হয়ে গেলো, এর সাথে সরকারের প্রণোদনায় কৃষকদের দেয়া রবিশস্য বুনতেও বিলম্বিত হচ্ছে। এতে করে স্থানীয় কৃষকরাও বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

ফাজিলপুরের শিবপুর গ্রামের কৃষক রহিম উল্ল্যাহ বলেন, তিনি এবার ৫’শ শতক জমিতে আমান ধান চাষ করেছেন। যদি ধানগুলো পানিতে না ডুবত ৭৫ মণ ধান ঘরে তুলতে পারতেন। কিন্তু তিনি এবার ২৫ মণ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কিনা সন্দেহ করছেন।

কৃষক মুজাহিদ বলেন, আরও ১৫ দিন আগে জমির ধানগুলো ঘরে তোলার কথা ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পানির নিচে নুয়ে পড়া ধানগুলো শ্রমিকের অভাবে কাটতে পারেনি। যদি জমিতে পানি জমে না থাকতো তাহলে আমাদের ধানগুলো নষ্ট হতো না।

কৃষক মো. আব্দুর রহমান বলেন, চারিদিকে খালি বিলে ও জমিতে পানি জমে থাকায় শীতকালীন কোন সবজি ক্ষেতও করতে পারছি না। সঠিক সময়ে ফসল বুনতে না পারলে কীভাবে আমরা পরিবারের চাহিদা মেটাবো।

ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. একরাম উদ্দিন জানান, মুহুরি প্রকল্পের রেগুলেটর এর গেটগুলো বন্ধ থাকায় মুহুরি নদীতে পর্যাপ্ত পানি থাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে। অর্থাৎ গেট খুলে অতিরিক্ত পানি অপসারণ করা হবে।

এ বিষয়ে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ার বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষকের তথ্য পেয়ে রোববার মুহুরি সেচ প্রকল্পের রেগুলেটরের দুটি গেইট খুলে দেয়া হয়েছে। শীঘ্রই কৃষকদের এ দুর্ভোগের অবসান ঘটবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Scroll to Top