আজ শুক্রবার জরাজীর্ণ শাড়ি পরে প্রথম আলোর বদরগঞ্জ প্রতিনিধির বাড়িতে আসেন। ঠান্ডায় কাঁপছিলেন। আড়ষ্ট গলায় কথা যেন হচ্ছিল না। বোঝা গেল, তিন দিনের ঠান্ডা ও হিমেল বাতাস তাঁকে কাবু করে ফেলেছে। বললেন, ‘ভাই, মোর খুব কষ্ট। একটা কম্বলের ব্যবস্থা করি দ্যান। তিন দিন থাকি খুব ঠান্ডা। এই ঠান্ডা মনে হয় মোক আর বাঁচি থাকপের দিবার নেয়। গাও খালি কাঁপোছে, হাত–পাও সিষ্টি নাগোছো। মানুষ কইছে, তোরায় কম্বল দিবার পারমেন। মোক একটা কম্বল দিয়া বাঁচাও ভাই।’
বদরগঞ্জের জেলেপাড়ার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চিকলি নদী। পারেই হতদরিদ্র জেলেখা বেগমের (৫৫) বাড়ি। দেখা গেল গ্রামের ভেতরে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গ্রামের ভেতরে ঢুকতেই গরম কাপড়েও নদীর হিমেল বাতাসে শরীর কেপে ওঠে। জেলেখা বেগম বলেন, ‘ভাঙা ঘর। নদীর হড়হড়া বাতাসে জেবনটা ব্যারে যাওচে। তিন দিন থাকি মাটিত পোয়াল (ধানের খড়) বিচিয়া আছি। হামাক দেখার কাঁয়ও নাই। মেম্বারের গোড়োত গেচনু। কইলো, “কম্বল আসলে দেমো।” তোমরায় কনতো বাবা, ঠান্ডা পালে যায়া কম্বল নিয়া মুই কী করিম!’