কেমন হবে ২০৩০ সালের প্রযুক্তিবিশ্ব

কেমন হবে ২০৩০ সালের প্রযুক্তিবিশ্ব

আবুল হাসান

বিশ্বজুড়ে অভাবনীয় পরিবর্তন এনেছে তথ্যপ্রযুক্তি। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে বিশ্ব নাটকীয়ভাবে বদলে যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তির জয়জয়কার এখন। কিন্তু এর শেষ কোথায়? উত্তর খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রযুক্তির এগিয়ে চলার এই গতির কারণে ২০২৩ সালের এই সময়ে দাঁড়িয়ে সঠিকভাবে বলা কঠিন যে এরপর প্রযুক্তিগত কতটুকু পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। তবে ২০৩০ সালের মধ্যে যেসব প্রযুক্তির ব্যবহার জনপ্রিয়তা পাবে জেনে নেওয়া যাক সেরকম কিছু নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে।

মানুষের মতো এআই বাস্তবে পরিণত হবে

২০৩০ সালের মধ্যে কম্পিউটার প্রসেসিং পাওয়ার, ভয়েস রিকগনিশন, ইমেজ রিকগনিশন, ডিপ লার্নিং এবং অন্যান্য সফ্টওয়্যার অ্যালগরিদমের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। একইভাবে, চ্যাটজিপিটি’র মতো মানুষের ভাষা প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি ক্রমাগত আপডেট হয়ে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাবে এটি দ্রুত আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স অর্থাৎ এআই জেনারেটেড ভার্চুয়াল সহকারীর ভুমিকা পালন করবে।

প্রসার ঘটবে ৮-কে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেটের

২০৩০ সালের মধ্যে বেশিরভাগ ভিআর স্ক্রিনে ৮-কে রেজোলিউশন থাকবে, যা ৪-কে স্ক্রিনে পিক্সেলের থেকে অনেক বেশি। ভিআর গেমগুলির প্রায় শূন্য লেটেন্সি থাকবে। ২০৩০ সালের মধ্যে বেশিরভাগ ভিআর হেডসেট ব্যবহারকারীদের মস্তিস্ক থেকে বৈদ্যুতিক সংকেত রেকর্ড করার জন্য ইন্টারফেস যুক্ত করতে পারে।

মিলিয়ন কিউবিটসহ প্রথম কোয়ান্টাম কম্পিউটারের আবির্ভাব হবে

২০৩০ সালের মধ্যে আইবিএম এবং গুগল এক মিলিয়ন কিউবিটসহ কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করতে পারে। এর ফলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, অর্থনৈতিক ও চিকিৎসাখাতের উন্নয়ন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস এবং সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটবে। ২০৩৫ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলো ক্লাউড এবং সাধারন ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে।

মঙ্গলগ্রহে অভিযান

২০২৪ সালের মধ্যে স্পেসএক্স এর মহাকাশচারীরা মহাকাশে যাত্রা করবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছাবে। গ্রহে পৌঁছানোর জন্য তারা সুপার হেভি রকেটে স্পেসএ স্টারশিপ ব্যবহার করবে। মঙ্গলগ্রহে বসেই মৌলিক উপকরণ এবং যন্ত্রাংশ তৈরির মতো কাজকর্ম করতে পারে এমন রোবট সাথে নিয়ে যাবে মহাকাশচারীরা।

কোয়ান্টাম ইন্টারনেটের পরীক্ষামুলক ব্যবহার

কোয়ান্টাম ইন্টারনেট তথ্য আদানপ্রদানে রেডিও তরঙ্গের পরিবর্তে কোয়ান্টাম সংকেত ব্যবহার করে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে পাঠানো ডেটা প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার করে হ্যাক করা বা আটকানো যাবে না। ২০৩০ সালে ক্লাউডভিত্তিক কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মাধ্যমে কোয়ান্টাম এনক্রিপ্ট করা তথ্য পাঠানো বা অ্যাক্সেস করতে ব্যক্তিগত কম্পিউটারেও ব্যবহার করা সম্ভব হতে পারে। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি ইতোমধ্যেই কোয়ান্টাম ইন্টারনেটের একটি নকশা উন্মোচন করেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এটির একটি বিটা ভার্সন পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

২০৩০ সালের মধ্যে ৬জি প্রযুক্তির ব্যবহারে ইন্টারনেটের গতি টেরাবাইট পর্যন্ত পাওয়া যাবে। এটি ৫জির চেয়ে প্রায় ১০০ গুন দ্রুতগতির হবে পারে। সেই গতিতে ১৪২ ঘন্টার নেটফ্লিক্স মুভি ডাউনলোড করতে সময় লাগবে মাত্র ১ সেকেন্ড।

ভাঁজযোগ্য ইলেকট্রনিক্স এর ব্যবহার বাড়বে

ফোল্ডেবল বা ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোনের পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে তুলনামুলকভাবে ভারী ইলেকট্রনি ডিভাইসের পরিবর্তে পাতলা কাগজের শীটের মতো সহজে ভাঁজ করা, সংরক্ষণ করা বা বহন করা যায় এমন ডিভাইসের ব্যবহার বাড়বে। এর মধ্যে নমনীয় ফোল্ডেবল টিভি ডিসপ্লেও থাকবে যা রোল করা বা পোস্টারের মতো ঝুলানো যাবে। ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোন এবং ভাঁজযোগ্য ই-বুকগুলিও ব্যাপক জনিপ্রয় হয়ে উঠতে পারে।

থ্রিডি প্রিন্টের ব্যবহার বাড়বে

থ্রিডি প্রিন্টিং সহজলভ্য ও প্রায় ৩০গুন দ্রুতগতির হবে এবং সাধারন মানুষের ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তিতে পরিণত হবে। জামাকাপড়েও চলে আসবে থ্রিডি প্রিন্টিং, ফলে খরচ অনেকগুন কমে যাবে।

১০০ টেরাবাইট হার্ড

সাধারন ব্যবহারকারীদের জন্য ২০২৬ সালের মধ্যে ৫০ টেরাবাইট ক্যাপাসিটির হার্ড ড্রাইভ বিক্রি হবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ টেরাবাইটের দ্রুতগতির হার্ড ড্রাইভ পাওয়া যাবে।

সারাবাংলা/এসবিডিই

Scroll to Top