তিন কিংবদন্তির সঙ্গে পাকিস্তানি গায়ক আতিফের গান

তিন কিংবদন্তির সঙ্গে পাকিস্তানি গায়ক আতিফের গান

সোশ্যাল মিডিয়ায় কখন কোন স্মৃতি হঠাৎ ফিরে এসে সবাইকে চমকে দেয়— তা কেউই আগে থেকে বুঝতে পারে না। ঠিক এমনই এক নস্টালজিক মুহূর্তে আবার আলোচনায় উঠে এসেছে সংগীতজগতের চার তারকার এক দুর্লভ মিলন। ভিডিওতে আছেন উপমহাদেশের তিন কিংবদন্তি— রুনা লায়লা, আবিদা পারভিন ও আশা ভোঁসলে। সঙ্গে আছেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় গায়ক আতিফ আসলাম। আর তাদের সবার গলায় একসুরে ধ্বনিত হয়েছে চিরচেনা সুফি গান— ‘মাস্ত কালান্দার’।

পুরনো ভিডিও, নতুন ঝড়

কোক স্টুডিও বাংলায় রুনা লায়লার কণ্ঠে নতুন আঙ্গিকে ‘মাস্ত কালান্দার’ প্রকাশের পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া আবার খুঁজে পেয়েছে সেই পুরনো, প্রায় ১২ বছর আগের ভিডিওটি। মুহূর্তেই সেটি ছড়িয়ে পড়তে থাকে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের নেটিজেনদের টাইমলাইনে। কেউ লিখছেন— “এটাই সর্বকালের সেরা ‘মাস্ত কালান্দার’।” আবার কেউ বলছেন— ‘এক ফ্রেমে তিন দেশের তিন কিংবদন্তি— এটাই ইতিহাস!’

‘সুর ক্ষেত্র’: যে মঞ্চে মিলেছিল তিন দেশ

২০১২ সালের জনপ্রিয় সংগীত প্রতিযোগিতা ‘সুর ক্ষেত্র’— ভারত-পাকিস্তানের তরুণ প্রতিযোগীদের সুরযুদ্ধের সেই মঞ্চই তৈরি করেছিল এই ঐতিহাসিক পরিবেশনার পটভূমি। বিচারক প্যানেলে তখন ছিলেন—রুনা লায়লা, আবিদা পারভিন, আশা ভোঁসলে। আর মেন্টর হিসেবে ছিলেন আতিফ আসলাম ও হিমেশ রেশমিয়া।

এক পর্যায়ে ‘মাস্ত কালান্দার’ গাইতে গাইতে তিন কিংবদন্তির পাশে এসে দাঁড়ান আতিফ। তার নরম, পরিচিত কণ্ঠ সুফি সুরের সঙ্গে মিশে তৈরি করে এক অনন্য আবহ।

কেন ভিডিওটি এত জনপ্রিয় হলো?

তিন দেশের সংগীত-ঐতিহ্য একই মঞ্চে মিলেছে।
চার ভিন্ন প্রজন্মের শিল্পীর কণ্ঠ এক সুরে গেঁথে গেছে।
ভিডিওটি দর্শকদের মনে নস্টালজিয়ার দরজা খুলে দিয়েছে।
রাজনৈতিক উত্তরের মাঝেও সংগীতের সংযোগ মানুষকে মনে করিয়ে দেয়—সংগীতের কোনো সীমানা নেই।

সুরের সাথেই বন্ধন

উপমহাদেশের সংগীতভক্তরা বহুবার দেখেছেন রুনা লায়লা বা আশা ভোঁসলে আলাদা আলাদাভাবে সুরের মায়া ছড়াতে। আবিদা পারভিন সুফি সংগীতকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আর আতিফ আসলাম আধুনিক প্রজন্মকে মুগ্ধ করেছেন তার স্নিগ্ধ কণ্ঠে। কিন্তু এই চারজনের একসঙ্গে গান করা—এ সত্যিই ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে।

তাই হয়তো বছর পেরিয়ে গেলেও, ভিডিওটি আজও দেখলে মনে হয়— এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে উপমহাদেশের সঙ্গীত-ঐতিহ্য যেন নিজের হাতে হাত রেখে গেয়ে উঠেছে,
‘দমা দম মাস্ত কালান্দার…’

Scroll to Top