ইসলামাবাদ, ১২ নভেম্বর – পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সম্প্রতি ইসলামাবাদে বোমা হামলার পর কাবুলকে ‘যুদ্ধের’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আফগান তালেবান সরকারকে পাকিস্তানে সহিংসতার জন্য দায়ী সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এনে আসিফ হুমকি দিয়েছেন, ইসলামাবাদ ‘বাধ্য হয়ে আফগানিস্তানে হামলা চালাতে পারে।’
আসিফের এই মন্তব্য আসে মঙ্গলবার ইসলামাবাদে সংঘটিত আত্মঘাতী বোমা হামলার পর, যাতে ১২ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, ‘আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোর ওপর হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না এবং মঙ্গলবারের হামলার পর কাবুলের সঙ্গে যুদ্ধও একেবারে অসম্ভব নয়।’
তিনি আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে হামলার নিন্দাকে ‘রাজনৈতিক নাটক’ বলে উল্লেখ করেন এবং দাবি করেন, পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিহত সন্ত্রাসীদের অধিকাংশই আফগান নাগরিক।
আসিফ বলেন, ‘আমরা মঙ্গলবারের হামলার পর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি। এই সব সন্ত্রাসীরা সেখান (আফগানিস্তান) থেকেই এসেছে।
গত কয়েক মাস ধরে তাদের সংগঠনগুলো পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করছে। গত এক বছরে তারা প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার জনকে এখানে পাঠিয়েছে এবং তারা বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে। নিহত সন্ত্রাসীদের প্রায় ৫৫ শতাংশই আফগান।’
আসিফ অভিযোগ করেন, কাবুলে কোনো ‘একীভূত সরকার’ নেই—তালেবান শাসন আসলে বিভিন্ন স্বার্থ ও এজেন্ডাসম্পন্ন দল ও গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত। তিনি বলেন, ‘কিছু গোষ্ঠী ভারতের সঙ্গে যুক্ত, আর কিছু অন্যদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
তাই এই দুই হামলাই আসলে আফগানিস্তানের দিক থেকে আসন্ন আগ্রাসনের ভূমিকা, যা আসলে ভারতেরই আগ্রাসন—যা আফগানিস্তানের মাধ্যমে আমাদের দেশে চালানো হচ্ছে।’
তিনি ভারত ও আফগানিস্তান উভয়কেই সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘পাকিস্তান একইভাবে জবাব দেবে। পাকিস্তান কখনো কোনো সামরিক অভিযান শুরু করবে না, তবে কেউ আগ্রাসন চালালে আমরা চুপ করে থাকব না—দৃঢ়ভাবে জবাব দেওয়া হবে।’
এর আগেও আসিফ দাবি করেছিলেন, আফগানিস্তান ‘ভারতের প্রোক্সি যুদ্ধ’ লড়ছে, বিশেষ করে ডুরান্ড লাইনের বরাবর।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া অন্য আরেকটি সাক্ষাৎকারে আসিফ বলেন, ‘ইসলামাবাদে হামলা চালিয়ে আফগানিস্তান যুদ্ধের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।
পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি সরাসরি কারো নাম উল্লেখ না করে লেখেন, ‘আমরা এখন যুদ্ধাবস্থায় আছি। যারা মনে করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনী শুধু আফগান-পাক সীমান্ত বা বেলুচিস্তানের দূরবর্তী এলাকায় যুদ্ধ করছে, তাদের আজকের ইসলামাবাদ জেলা আদালতের আত্মঘাতী হামলাটি সতর্কবার্তা হিসেবে নেওয়া উচিত। এটি গোটা পাকিস্তানের যুদ্ধ—যেখানে সেনাবাহিনী প্রতিদিন আত্মত্যাগ করছে, যাতে জনগণ নিরাপদ বোধ করে।’
সূত্র: কালের কণ্ঠ
এনএন/ ১২ নভেম্বর ২০২৫





