সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার ওপর থেকে সবধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে জাতিসংঘ। দীর্ঘ ১৩ বছরের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়ায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের ধারায় এটি একটি বড় অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে বিদ্রোহী বাহিনীর নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসেন আহমেদ আল-শারা। এরপর তাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত করা হয়।
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ এই পদক্ষেপকে একটি জোরালো রাজনৈতিক সংকেত হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়া একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছে।
আহমেদ আল-শারা ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্ব দেওয়ার সময় থেকেই জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন। সংগঠনটি একসময় আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত ছিল, তবে ২০১৬ সালে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করে। চলতি বছরের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রও এইচটিএসকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেয়।
জাতিসংঘ একই সঙ্গে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস খাত্তাবের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্র দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা শান্তি ও পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় আমাদের পাশে রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দিনই প্রেসিডেন্ট শারা যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। সোমবার তিনি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। ট্রাম্প বলেন, সিরিয়ার নেতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভালো অগ্রগতি করেছেন।
এর আগে মে মাসে রিয়াদ সফরে গিয়ে দুই নেতার প্রথম সাক্ষাৎ হয়। বৈঠকের পর ট্রাম্প শারাকে অত্যন্ত শক্তিশালী অতীতের অধিকারী কঠোর নেতা বলে উল্লেখ করেছিলেন।
এ বছর সেপ্টেম্বরে আহমেদ আল-শারা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন। প্রায় ৬০ বছরের মধ্যে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়া প্রথম সিরীয় নেতা তিনি। বক্তৃতায় তিনি বলেন, সিরিয়া বিশ্বের জাতির মধ্যে তার ন্যায্য স্থান পুনরুদ্ধার করছে এবং তিনি গাজার জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।



