ঘূর্ণিঝড়ে ফিলিপাইন-ভিয়েতনামে নিহত অন্তত ১৯৩, যাচ্ছে কম্বোডিয়ার দিকে | চ্যানেল আই অনলাইন

ঘূর্ণিঝড়ে ফিলিপাইন-ভিয়েতনামে নিহত অন্তত ১৯৩, যাচ্ছে কম্বোডিয়ার দিকে | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাণ্ডব চালায় টাইফুন কালমায়েগি (স্থানীয়ভাবে টিনো নামে পরিচিত)। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ে ফিলিপাইনে অন্তত ১৮৮ জন এবং ভিয়েতনামে ৫ জন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ১৩৫ জন।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

এরআগে, বৃহস্পতিবার মধ্য ভিয়েতনামের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ১৪৯ কিলোমিটার বেগে বয়ে যায় ঘূর্ণিঝড়টি। এখন বর্তমানে পশ্চিমে কম্বোডিয়া ও লাওসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। রাতভর তাণ্ডবের পর ভিয়েতনামের মধ্যাঞ্চলীয় উপকূলজুড়ে ধ্বংসস্তূপের চিত্র দেখা গেছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা, ভেঙে গেছে ছাদ, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শত শত ঘরবাড়ি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি সেনা ও কর্মী, ৬ হাজার ৭০০ যানবাহন এবং ছয়টি বিমান মোতায়েন করেছে ভিয়েতনাম সেনাবাহিনী। বহু বিমানবন্দর ও মহাসড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন জরুরি বৈঠকে বলেছেন, আমাদের অবশ্যই বিচ্ছিন্ন এলাকায় পৌঁছে মানুষের জন্য খাবার, পানীয় জল এবং প্রয়োজনীয় জিনিস নিশ্চিত করতে হবে। কোন মানুষকে ক্ষুধার্ত বা ঠান্ডায় ফেলে রাখা যাবে না।

ফিলিপাইনে এই টাইফুন আরও মারাত্মক আঘাত হানে সপ্তাহের শুরুতে। প্রবল বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢাল বেয়ে কাদা ধ্বসে পড়ে নিম্নাঞ্চল ও আবাসিক এলাকায়। মুহূর্তের মধ্যে আকস্মিক বন্যায় পুরো গ্রাম ও দরিদ্র পাড়াগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় ফিলিপাইনের জনবহুল সেবু দ্বীপে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তাঁরা উচ্চভূমিতে আশ্রয় নিতে গিয়ে দেখেছেন প্রবল স্রোতে বাস, গাড়ি, এমনকি শিপিং কন্টেইনারও ভেসে যাচ্ছে।

তালিসে শহরের বাসিন্দা মেলি সাবেরন বলেন, আমাদের আর কোন বাড়ি নেই। আমরা কিছুই উদ্ধার করতে পারিনি। এমন টাইফুন আমরা আগে দেখিনি।

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র ইতোমধ্যেই দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। সরকার জানিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরে আরও একটি সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে, যার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

ভিয়েতনাম কর্তৃপক্ষ নিম্নাঞ্চলে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, কারণ গত সপ্তাহেই দেশটির মধ্যাঞ্চলে রেকর্ড বৃষ্টিপাতে অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

টাইফুন কালমায়েগি বর্তমানে দুর্বল হয়ে কম্বোডিয়া ও লাওসের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তবে ঝুঁকি এখনও কাটেনি। বিশেষ করে পাহাড়ি ঢাল ও নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়ে গেছে।

Scroll to Top