গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার আপনাকে সুস্থ রাখবে – DesheBideshe

গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার আপনাকে সুস্থ রাখবে – DesheBideshe


গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার আপনাকে সুস্থ রাখবে – DesheBideshe

গর্ভাবস্থা একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল একটি সময়। এই সময়ে মায়ের ও গর্ভস্থ শিশুর সুস্থতা অনেকাংশেই নির্ভর করে সঠিক পুষ্টির ওপর। সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য শুধু শিশুর সঠিক বিকাশেই সাহায্য করে না, বরং মায়ের শরীরকেও সুস্থ রাখে। তাই গর্ভাবস্থায় সঠিক ধরনের খাবার খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় যে ধরনের খাবারগুলো খাবেন-

প্রথমেই বলা যায়, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খাওয়া উচিত। প্রোটিন গর্ভস্থ শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে এবং মায়ের অতিরিক্ত রক্তের প্রয়োজনে সহায়তা করে। মাছ, মুরগি, ডিম, দুধ, দই, বাদাম, ডাল ও বীজজাতীয় খাবার ভালো প্রোটিনের উৎস।

শাকসবজি ও ফলমূল গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও আঁশ থাকে, যা হজমে সহায়তা করে, কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে এবং শিশুর সুস্থ বিকাশে ভূমিকা রাখে। গাজর, পালং শাক, ব্রকোলি, কমলা, কলা, আপেল ও বেরিজাতীয় ফল প্রতিদিনের খাবারে রাখা উচিত।

সম্পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবার যেমন-ব্রাউন রাইস, ওটস, আটার রুটি ও সিরিয়াল দীর্ঘস্থায়ী শক্তি জোগায় এবং আঁশ ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহ করে। এতে থাকা আয়রন, বি ভিটামিন ও ম্যাগনেসিয়াম গর্ভবতী নারীর জন্য উপকারী।

ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার শিশুর হাড় ও দাঁতের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম না পেলে শিশু মায়ের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করে, ফলে মায়ের হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। দুধ, দই, পনির ছাড়াও পালং শাক, বাদাম ও ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ সয়া দুধও ভালো উৎস।

আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে, যা শিশুর জন্য অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে। আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতা ও ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। তাই গরুর মাংস, কলিজা, ডিম, পালং শাক, শুকনো ফল ও আয়রনযুক্ত সিরিয়াল খাওয়া উচিত। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন কমলা বা টমেটোর সঙ্গে আয়রন খেলে শোষণ ভালো হয়।

ফলিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৯) গর্ভাবস্থার শুরুতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, কারণ এটি শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক গঠনে সহায়তা করে। শাকসবজি, ডাল, সাইট্রাস ফল ও ফলিক অ্যাসিড-সমৃদ্ধ সিরিয়াল খাওয়া উচিত।

পর্যাপ্ত পানি পান করাও জরুরি। পানি হজমে সহায়তা করে, অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ ঠিক রাখে এবং প্রস্রাবের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।

তবে কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। যেমন কাঁচা বা অর্ধসিদ্ধ মাংস ও ডিম, অপরিষ্কার বা পাস্তুরীকরণবিহীন দুগ্ধজাত খাবার, উচ্চ পারদের মাছ ,অতিরিক্ত ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল।

গর্ভাবস্থায় খাবার হতে হবে সুষম, বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ। সঠিক খাবার খেলে মা সুস্থ থাকবে এবং শিশুর বিকাশ হবে সুন্দরভাবে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে একজন মা তার সন্তানের সুস্থ ভবিষ্যতের ভিত্তি তৈরি করতে পারেন।

আইএ



Scroll to Top