বাংলাদেশে কিশোরদের মধ্যে যৌন সহিংসতা ও মানব পাচার প্রতিরোধে যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ হিসেবে যাত্রা শুরু করেছে ‘টিন-এক্স বাংলাদেশ’।
এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা কিশোরদের জন্য নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। এটি টিনেজ ধর্ষণ প্রতিরোধ, মানব পাচার বিরোধী সচেতনতা, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা এবং আইনি পরামর্শের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোতে সহায়তা দিচ্ছে।
ইতোমধ্যেই এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরাসরি ১৩৫ জনের বেশি কিশোর-কিশোরী সহায়তা পেয়েছে। নতুন করে এই উদ্যোগ চালু হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
এই উদ্যোগটি পরিচালিত হচ্ছে দ্যা স্টার্টআপ আইও-এর অধীনে, প্রজেক্ট বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সংস্থা স্টেট অব ইয়ূথ এর ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস পিস প্রাইজ প্রজেক্ট থিম ফান্ড থেকে এক হাজার দুইশ পঞ্চাশ ইউরো অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এই উদ্যোগের গুরুত্ব বিবেচিত হচ্ছে।
দ্যা স্টার্টআপ আইও-এর অধীন আরও যেসব কার্যক্রম রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে কিডস হেল্পলিংক, স্টার্টআপ সাইবার, গার্লস টিনসেফ এবং ডেটা পায়ার যেগুলো শিশু ও কিশোরদের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা, মানসিক ও আইনি সহায়তা এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বিশেষভাবে কাজ করে যাচ্ছে। টিন-এক্স এই বৃহৎ কাঠামোর একটি অংশ হিসেবে এখন স্বতন্ত্রভাবে আলোচিত।
দ্যা স্টার্টআপ আইও-যার প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি হিসেবে রয়েছেন ১৬ বছর বয়সী শাহী আল সদাত। তার পাশে রয়েছে এই প্রকল্পের বর্তমান হেড অব লিড আসমাউল হুসনা জীম।
তরুণ এই দুই কিশোরের উদ্যোগ প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব আজ থেকেই গড়ে উঠছে—সচেতনতা, উদ্ভাবন ও সাহসিকতার ভিত্তিতে। তাদের স্বপ্ন একটি নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা, যেখানে প্রতিটি কিশোর-কিশোরী নিজেকে নিরাপদ ও স্বীকৃত মনে করতে পারে।

শাহী আল সদাত ২০২৪ সালে ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস পিস প্রাইজ-এর জন্য মনোনীত হন এবং একই বছরে পান ন্যাশনাল টেক অ্যাওয়ার্ড। তাকে ২০২৫ সালের টেডএক্স ড্যাফোডিল অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যেখানে তার বক্তব্য ৪৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে।
তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ও শিশু অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রের রাইস ইউনির্ভাসিটি থেকে ওমেন, জেন্ডার ও সেক্সুয়ালিটি স্টাডিস প্রোগ্রামের জন্য একটি সম্পূর্ণ স্কলারশিপ-এর অফারও তিনি পেয়েছেন যা ২০২৭ সালের ফল সেশনে শুরু হবে।
আসমাউল হুসনা জীম ইতোমধ্যেই সাতটি জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেছেন, যা তাঁর নেতৃত্ব ও সামাজিক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।