ইরানের বন্দরে বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ২৮, বহু আহত

ইরানের বন্দরে বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ২৮, বহু আহত

শনিবার ইরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বিস্ফোরণে আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০ জনে।

বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় অনুযায়ী সকালের দিকে বন্দর আব্বাসের কাছে অবস্থিত এই বন্দরে বিস্ফোরণের ফলে আশপাশের ভবনের জানালা ও ছাদ ভেঙে পড়ে এবং অসংখ্য গাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের কম্পন ৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত অনুভূত হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সূত্রে জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত ছয়জন নিখোঁজ রয়েছেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিস্ফোরণের আগে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং পরে বিকট শব্দে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর রাস্তাগুলো ধোঁয়া ও ধ্বংসাবশেষে ঢেকে যায়।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, পুরো গুদাম ধোঁয়া, ধুলো এবং ছাইয়ে ভরে গিয়েছিল। আমি বুঝতেই পারিনি কখন টেবিলের নিচে আশ্রয় নিয়েছি বা কখন বিস্ফোরণে সেখানে পড়ে গিয়েছিলাম। ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন যে আগুন একটি কন্টেইনার থেকে অন্য কন্টেইনারে ছড়িয়ে পড়ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোববার এই অঞ্চলের সকল স্কুল ও সরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। এক বেসরকারি সামুদ্রিক ঝুঁকি বিশ্লেষক সংস্থা অ্যামব্রে ইন্টেলিজেন্স জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কন্টেইনারগুলোতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির জন্য ব্যবহৃত কঠিন জ্বালানি সংরক্ষিত ছিল। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ইরানের পতাকাবাহী একটি জাহাজ সোডিয়াম পারক্লোরেট রকেট জ্বালানির একটি চালান বন্দরে খালাস করেছিল।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দাহ্য পদার্থ সংরক্ষিত কন্টেইনারে আগুন লাগার পরই বিস্ফোরণ ঘটে। পরে ইরানের শুল্ক বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, একটি রাসায়নিক ডিপো থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ইরানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাও স্বীকার করেছে যে, পূর্বে শহীদ রাজাই বন্দরে রাসায়নিক পদার্থের নিরাপদ সংরক্ষণ নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।

এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হতাহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Scroll to Top