জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সনদ সিবিডির আওতায় করা কুনমিং-মন্ট্রিয়ল চুক্তিতে গত বছর সই করেছে বাংলাদেশ। এর ফলে দেশের ১৭ শতাংশ ভূখণ্ড ও ১৩ শতাংশ সাগর এলাকাকে সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে। বর্তমানে দেশের ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ স্থলভাগ এবং ৫ দশমিক ৪ শতাংশ সামুদ্রিক এলাকা সংরক্ষিত এলাকার আওতায় রয়েছে। বেশির ভাগ সংরক্ষিত এলাকার আয়তন খুব ছোট হওয়ায় তা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ চুক্তি অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের ৩০ ভাগ অঞ্চল সংরক্ষিত এলাকার আওতায় আনতে হবে।
প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন, বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান সংরক্ষিত এলাকাগুলো যাতে এক ইঞ্চিও অন্য কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে উদ্যোগ নিতে হবে। আর কুনমিং-মন্ট্রিয়ল চুক্তি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার পূরণ করতে হলে এ ধরনের এলাকা আরও বাড়াতে হবে। তা না করে উল্টো এসব এলাকায় সাফারি পার্কের মতো অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। এটা সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের প্রকৃতি রক্ষায় দেশের বিদ্যমান আইন ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বনভূমিগুলোয় বিশ্বজুড়ে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী বেঙ্গল টাইগার বা বাঘ-ভালুক, চামুচ ঠুঁটো বাটান বা স্পুন বিলড স্যান্ডপাইপার এবং গাঙ্গেয় ডলফিন বাস করে। কমপক্ষে এক কোটি মানুষের জীবিকা সরাসরি বনের সম্পদ যেমন গাছ, মাছ, মধুসহ নানা সম্পদ সংগ্রহের ওপর নির্ভরশীল। বনের ওপর চাপ তৈরি হওয়ায় গত ৮০ বছরে দেশের ৪০ শতাংশ এলাকার গাছপালা কেটে মানুষের বসতি তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ১১ শতাংশেরও কম এলাকায় প্রাকৃতিক বন টিকে আছে।