এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা উপলক্ষে দেয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা তাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সরস্বতী পূজা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম জনপ্রিয় ধর্মীয় উৎসব। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে বিদ্যা ও জ্ঞানের কল্যাণময়ী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন অগণিত ভক্ত ও শিক্ষার্থী। পূজা অর্চনার পাশাপাশি বর্ণিল সাজ ও নানা আয়োজনে এক আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে দেশের প্রতিটি মানুষ একটি অসাম্প্রদায়িক, কল্যাণকর ও উন্নত সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে— এটাই সকলের প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দেশ। এক্ষেত্রে আমাদের রয়েছে সুমহান ও সুপ্রাচীন ঐতিহ্য। আবহমান কাল থেকে এদেশের মানুষ পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ ধর্মীয় আচার, অনুষ্ঠান পালন করে আসছে। এ সুমহান ঐতিহ্যকে সুসংহত রাখতে দেশবাসীকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, আমি আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা গড়ে তুলবো জ্ঞানভিত্তিক, সৌহার্দপূর্ণ ও বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ। সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হোক আমাদের দেশ, জাতি ও সমাজের প্রতিটি নাগরিক।
পৃথক বাণীতে শুভেচ্ছা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। হাজার বছর ধরে এদেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একত্রে বসবাস করে আসছেন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এদেশ সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের ভাগ্য উন্নয়ন এবং সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছো
প্রধান উপদেষ্টা হিন্দু সম্প্রদায়ের সকলকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। আমি বাংলাদেশের সকল নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করি।
প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল থেকে বাণী অর্চনা, আরতি ও ভক্তদের পুষ্পাঞ্জলিতে দেবী সরস্বতীর আরাধনা করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তাদের বিশ্বাস, ভগবানের জ্ঞান ও বিদ্যার রূপ হলেন দেবী সরস্বতী। প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের শ্রী পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যাদেবীর পূজা হয়। হাতে বীণা থাকে বলে সরস্বতীকে বীণাপাণিও বলা হয়। সাদা রাজহাঁস বিদ্যার দেবীর বাহন। ঢাকার বিভিন্ন মন্দির ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজার আয়োজন হলেও সরস্বতী পূজার প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল মাঠ।