ঋণখেলাপিরা যেন নির্বাচনে মনোনয়ন না পান চেষ্টা করা হবে: মির্জা ফখরুল

ঋণখেলাপিরা যেন নির্বাচনে মনোনয়ন না পান চেষ্টা করা হবে: মির্জা ফখরুল

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো ঋণখেলাপিকে মনোনয়ন না দেওয়ার ব্যাপারে বিএনপি সতর্ক থাকবে বলে অঙ্গীকার করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমরা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, খেলাপিরা মনোনয়ন যেন না পান তা নিশ্চিত করতে আমরা সচেষ্ট থাকব। এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকব।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত ‘শ্বেতপত্র ও অতঃপর : অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে তিনি এসব কথা বলেন।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সিম্পোজিয়ামে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক রেহমান সোবহান উপস্থিত ছিলেন।

অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাব খর্ব করতে ঋণখেলাপিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার প্রস্তাব বিএনপি সমর্থন করবে কি না- অধ্যাপক রেহমান সোবহানের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।

GOVT

তিনি জানান, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নিয়ে কাজ করছে তার দল। তবে রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয় বলেও স্বীকার করেন এই রাজনীতিক।

দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথভাবে পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা প্রাতিষ্ঠানিক মীমাংসায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের প্রয়োজন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঠিকভাবে পুনর্গঠন করা। যথেষ্ট হয়েছে। আসুন, আমরা সত্যিকার অর্থে আমাদের স্বপ্ন ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশকে গড়ে তুলি।

ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জনগণ। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে রাজি নই।

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিএনপি কেন অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিশ্বাস, কেবল নির্বাচিত সরকারই দেশের সমস্যাগুলোর কার্যকর সমাধান দিতে পারে। যেহেতু নির্বাচিত সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে, তাই জনগণের সমস্যা সমাধানে তাদের সক্ষমতা থাকে।

ফখরুল বলেন, অনেকেই আশা করছেন ছয় মাসের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার সব পেরে যাবে, যা আসলে সম্ভব না। এজন্য আমরা নির্বাচনে বেশি জোর দিচ্ছি। আমাদের সংসদে কখনো গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি। আমরা চেষ্টা করে দেখি পারি কি না।

তিনি আরও বলেন, সংস্কারের বিষয়ে দুই বছর আগেই বলেছি। এজন্য বিএনপি ৩১ দফা দিয়েছে। অর্থনৈতিক সংস্কার ও রাজনৈতিক সংস্কার। আমরা রাজনৈতিক সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। অনেকে এই গণঅভ্যুত্থানকে বিপ্লবের সঙ্গে তুলনা করেন। আমি বলব এটা গণঅভ্যুত্থান। এজন্য আমরা রাজনৈতিক সংস্কারের কথা বলছি।

বিএনপি কী ধরনের সংস্কার চায় সেই প্রসঙ্গে এই রাজনীতিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুবারের বেশি হতে পারবেন না। সংসদ দুই কক্ষবিশিষ্ট হবে। যারা নির্বাচন করেন না কিন্তু তারা যেন দেশ চালানোয় অংশগ্রহণ করতে পারেন- এ ব্যবস্থা করব। আমরা বৈষম্য দূর করতে চেষ্টা করব। এজন্য নির্বাচনের পর আমরা জাতীয় সরকার গঠনের কথা বলেছি।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, পারবো না এ কথা বলা যাবে না। আমরা জনগণের কাছে ঐক্যবদ্ধ।

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সংকট সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। চীন ও ভারতের সঙ্গে আলোচনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া তাদের অগ্রাধিকারে ছিল না।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি যদি ক্ষমতায় ফেরে, তবে অতীতের মতো রোহিঙ্গা সংকটের যথাযথ সমাধান খুঁজে বের করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

Scroll to Top