আমরা ক্রিকেটাররা হাসার চেয়ে বেশি কাঁদি: সৌম্য

আমরা ক্রিকেটাররা হাসার চেয়ে বেশি কাঁদি: সৌম্য

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ঘরোয়া লিগে আহামরি পারফর্ম করতে পারেননি সৌম্য সরকার। যখন আবারও টাইগার স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন তখনও সফল হচ্ছিলেন না। সৌম্যকে শুনতে হয়েছে অনেক সমালোচনা। অবশেষে ৫ বছর পর ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন, দল হারলেও ম্যাচসেরা হয়েছেন; অবশেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে সমালোচনা নিয়ে মুখও খুলেছেন সৌম্য। বাঁহাতি এই ব্যাটার বললেন, ক্রিকেটাররা নাকি হাসার চেয়ে বেশি কাঁদে।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নিউজিল্যান্ডের নেলসনে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে ইনিংসের শুরু থেকেই বাড়তি দায়িত্বশীলতার পরিচয়ে দেন ওপেনার সৌম্য সরকার। তিনি ইনিংসের শুরু থেকে ৪৯.১ ওভার পর্যন্ত উইকেটে থেকে দলকে নেটে নিয়ে যান।

ওপেনিংয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে অষ্টম ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরার আগে ১৫১ বলে ২২টি চার আর দু’টি ছক্কার সাহায্যে ক্যারিয়ার সেরা ১৬৯ রান করেন সৌম্য। তার সেঞ্চুরি আর মুশফিকুর রহিমের ৫৭ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে ভর করে ৪৯.৫ ওভারে ২৯১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। টার্গেট তাড়ায় ২২ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। 

এদিন খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক ব্যর্থতার সমালোচনা  নিয়ে সৌম্য বলেন, আমি তো খেলোয়াড়, আমাকে খেলতেই হবে। ভালো করলে ভালোটা নিয়ে লিখবেন, খারাপ করলে খারাপটা নিয়ে। এটা আপনাদের কাজ। আমার কাজ খেলা। তাই সমালোচনা নিয়ে অত ভাবিনি। কারণ, ভাবলে নিজের ওপরই চাপ পড়ত বা নিজের ওপর আরও বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ত। আমি শুধু নিজের ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম এবং প্রক্রিয়াগুলো ঠিক রাখতে চেয়েছিলাম।

বাঁহাতি এই ওপেনার আরও বলেন, আপনারা যদি কারও নেতিবাচক দিক খোঁজেন, তাহলে শুধু নেতিবাচকতাই পাবেন। ইতিবাচকভাবে দেখলে অনেক ইতিবাচকতা খুঁজে পাবেন। হয়তো তিনি ইতিবাচক দিকটা নিয়েই চিন্তা করেন। একটা সময় হয়তোবা সমালোচনার খবর দেখতাম। কিন্তু সত্যি বলতে, প্রায় এক বছর আমার ফোনে এ ধরনের কোনো সংবাদ আসেনি।

সৌম্য আরও বলেন, আমার ফেসবুক বন্ধু বা অন্যরা ক্রিকেট নিয়ে কোনো কথা বললে আমি তার সঙ্গে থাকি না। যে ইতিবাচক কথা বলে, আমি তার সঙ্গেই থাকি এবং ইতিবাচক দিকগুলো নিয়েই ভাবি। ভালো-খারাপ দুটোই থাকবে। কিন্তু খারাপ করলে তো ক্রিকেট ছেড়ে চলে যেতে পারব না। ক্রিকেটের জন্যই এত দূর আসতে পেরেছি, ক্রিকেটের জন্যই এত পরিশ্রম করছি।

সৌম্য বলেন, একজন ক্রিকেটার প্রতিদিন ভালো খেলবে না। একজন মানুষ যেমন প্রতিদিন ভালো খাবারের প্রত্যাশা করে না, তেমনি আমরা যারা ক্রিকেটার, তারাও প্রতিদিন ভালো কিছুর আশা করি না। আসলে আমরা ক্রিকেটাররা হাসার চেয়ে বেশি কাঁদি। কারণ, একটা সিরিজে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলে হয়তোবা কেউ একটি-দুটি ম্যাচে ভালো খেলে। বাকিটা খারাপই যায়। কিন্তু খারাপটা নিয়েই যদি পড়ে থাকি, তাহলে আমরা পিছিয়ে যাব।

/আরআইএম

Scroll to Top