এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
ইরানের কঠোর ইসলামিক পোশাক আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে নিজের পরনের কাপড় খুলে অন্তর্বাস পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ান এক নারী। গত শনিবার ২ নভেম্বর ইরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অনলাইন ভিডিওটি বেশ ভাইরাল হয়ে যায়। তবে এই ঘটনার পর ওই নারীকে আর কোথাও দেখা যায়নি।
এনডিটিভি জানিয়েছে, সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখার নিরাপত্তা রক্ষীরা ওই নারীকে আটক করছেন। এই ঘটনার পর তার অবস্থান সম্পর্কেও কিছু জানা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুখপাত্র আমির মাহজব দাবি করেছেন, পুলিশ প্রমাণ পেয়েছে যে তিনি মানসিক ব্যাধিতে ভুগছেন এবং গুরুতর মানসিক চাপ এর মধ্যে ছিলেন। তিনি বলেন, ওই নারী তার স্বামীর সাথে থাকতেন না এবং দুই সন্তানের মা ছিলেন।
একজন ইরানি ছাত্রের সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেল থেকে বলা হয়েছে, যখন একটি স্বেচ্ছাসেবক আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা পোষাক কোড সঠিকভাবে অনুসরণ না করার জন্য তাকে হয়রানি করেছিল তখন নারীটি তার অন্তর্বাস খুলে ফেলে। অ্যামনেস্টি বলেছে, তিনি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার পরে তাকে সহিংসভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
সোশ্যাল মিডিয়ার শেয়ার করা ফুটেজে দেখা গেছে, একদল লোক ওই নারীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্য থেকে বোঝা যায় তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমির কবির নিউজলেটার অভিযোগ করেছে যে গ্রেপ্তারের সময় তাকে মারধর করা হয়েছিল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ওই নারীর অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেছে ও তার বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগের স্বাধীন তদন্তের দাবি করেছে।
এর আগে, ২০২২ সালে ১৯ বছরের মাহশা আমিনির মৃত্যুতে গোটা ইরানে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়েছিল। পোশাকবিধি না মানায় তাকে আটক করেছিল নিরাপত্তারক্ষীরা। নিরাপত্তা হেফাজতে থাকার সময় তার মৃত্যু হয়। অভিযোগ, হেফাজতে থাকার সময় অত্যাচার করে মাহশাকে মেরে ফেলা হয়েছে।
এই মৃত্যুর প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয় সারাদেশ। প্রকাশ্যে হিজাব পুড়িয়ে, মাথার চুল কেটে প্রতিবাদ জানান ইরানের মেয়েরা। সেই বিক্ষোভ কঠোরভাবে দমন করে ইরান সরকার। ইরানে নারীদের চুল ঢেকে রাখা, ঢিলেঢালা পোশাক পরা বাধ্যতামূলক।