এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
২ থেকে ১৫ ইঞ্চি বরফের চাদর বিছিয়ে রয়েছে মঙ্গল গ্রহ, তার সঙ্গে পাওয়া গেছে ধূলিকণাও। এবার বিজ্ঞানীরা এই গ্রহের ব্যাপারে আরও একটি রহস্যময় জিনিস জানতে পেরেছেন, যার দরুণ এখানে প্রাণের সম্ভাবনাও ব্যাপক বেড়ে যায়। অর্থাৎ, মঙ্গল গ্রহে গিয়েও হয়ত বেঁচে থাকা সম্ভব বলে আশা দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) হিন্দুস্তান টাইমস এর প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীর নিকটতম গ্রহগুলোর মধ্যে একটি মঙ্গল গ্রহ। এই প্রথম নয়, মঙ্গল গ্রহ অনেক দিন ধরেই বিজ্ঞানীদের আকর্ষণ করে আসছে।
এখন বিজ্ঞানীরা এই লাল গ্রহের বরফের অংশে ভিনগ্রহের প্রাণের আশা করছেন। গবেষণার জন্য বহুবার নাসাসহ অন্যান্য মহাকাশ সংস্থাগুলো এখানে মিশন চালিয়ে গিয়েছে। এতদিন পর বেরিয়ে এল স্বপ্নময় এই খবর।
বিজ্ঞানের মতে, পৃথিবীর মতো মঙ্গলও বাসযোগ্য অঞ্চল হওয়ার কথা। কারণ, উভয়ই সূর্য থেকে এত দূরত্বে বসবাস করে যে এখানে বেঁচে থাকা সাধারণ একটা ব্যাপার। পৃথিবী নিজেই তার প্রমাণ। কিন্তু মঙ্গলে সেই প্রাণের সন্ধান এতদিন পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে মিলেছে ইঙ্গিত।
নতুন এক গবেষণা করে বিজ্ঞানীদের মনে এক অটুট বিশ্বাস জন্মেছে, লাল গ্রহের শুষ্ক বরফের নীচে সালোকসংশ্লেষণের মতো প্রক্রিয়া ঘটতে পারে। এর দরুণ বরফের নীচেও জীবনের সন্ধান মেলার সম্ভাবনা প্রবল।
সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া কী?
উদ্ভিদ, শেওলা এবং সায়ানোব্যাকটেরিয়া সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার সময় রাসায়নিক শক্তি উৎপাদন করে। এর জন্য আবার পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি এবং সূর্যের আলোর প্রয়োজন। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের অধিকাংশ অক্সিজেন এই সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়।
একটি নতুন গবেষণা অনুসারে, মঙ্গল গ্রহের মেরুগুলোর কাছে বরফের ঘন আচ্ছাদন রয়েছে। তাই এর নীচে জীবন থাকলেও থাকতে পারে।
মঙ্গলে কি সত্যিই বেঁচে থাকা সম্ভব
নাসা জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গবেষক আদিত্য খুল্লার এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা এটা বলছি না যে মঙ্গলে প্রাণের সন্ধান পাওয়া গেছে, তবে আমরা বিশ্বাস করি মঙ্গলের ধুলোময় এবং শুকনো হয়ে যাওয়া বরফের চাদরের নীচে প্রাণের সম্ভাবনা থাকলেও থাকতে পারে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে তদন্ত করা যাবে।
জানা গেছে, মঙ্গলে পানি শেষ হয়ে গিয়েছে। কারণ আদিত্য খুল্লার নিজেই বলেন, পৃথিবীর ওজোন স্তরের মতো মঙ্গলে কোনও সুরক্ষা ঢাল নেই। এ কারণে এই ৩০ শতাংশ বেশি অতিবেগুনী রশ্মির প্রকোপ পড়ে, যা জীবনের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
তবে এত হতাশার মধ্যেই আশা যোগাচ্ছে একটি তথ্য। সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা যায়, মঙ্গল গ্রহে ২ থেকে ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত বরফের আচ্ছাদন রয়েছে। এতে আবার ০.১ শতাংশ ধূলিকণাও পাওয়া গিয়েছে। এবার বরফ ও ধুলো একসঙ্গে মিশে যাওয়ার কারণে, কিছু কিছু জায়গায় বরফের পুরুত্ব ৭ থেকে ১০ ফুট পর্যন্তও হতে পারে। এর দরুণ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণের প্রভাবও কমে গিয়েছে। এমন অবস্থায় বরফের তলদেশে প্রাণের বিকাশের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।