এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
৩৭ বছর পর রূপ কানোয়ার ‘সতীদাহ’ মামলায় অভিযুক্ত ৮ জনকে প্রমাণাভাবে বেকসুর খালাস দিয়েছে রাজস্থানের জয়পুরের বিশেষ আদালত।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ভারতীয় বুলেটিন খবর ৩৬৫ দিন এর প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
উল্লেখ্য, এই প্রজন্মের অনেকেই রূপ কানোয়ার নামের সঙ্গে পরিচিত না থাকলেও ৩৭ বছর আগে রাজস্থানের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে এই যুবতীকে ‘সতী’ করে জীবন্ত দাহ করা হয়। জ্ঞাতসারে এটাই ছিল ভারতের সর্বশেষ সতীদাহ। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিউরে ওঠে গোটা দেশ।
তুমুল হইচই পড়ে যায় জাতীয় রাজনীতিতেও। দীর্ঘদিন ধরে খবরের শিরোনামে ছিল এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিবরণ ও তদন্তের গতিপ্রকৃতি।
রূপ কানোয়ারকে সতী করার পর তার চিতাকে মন্দির করে পুজোপাঠ শুরু হয়। গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে, ভিনরাজ্য থেকেও পূণ্যার্জনের টোপে পা দিয়ে গ্রামে ভিড় জমাতে শুরু করেন মানুষজন। সতীদাহর ঘটনায় যারা যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ, সেই ৮ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তারপর দীর্ঘ ৩৭ বছর কেটে গেলেও তাদের অপরাধ প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ। তাই এই মামলায় গঠিত বিশেষ আদালত প্রমাণাভাবে বেনিফিট অফ ডাউটের ভিত্তিতে বেকসুর মুক্তি দিয়েছে বুধবার।
সভী নিবারণ আদালতের বিশেষ বিচারক অক্ষিকানসাল বুধবার মহেন্দ্র সিং শ্রাবণ সিং, নিহাল সিং, জিতেন্দ্র সিং, উদয় সিং, দশরথ সিং, লক্ষ্মণ সিং ও ভাঁওয়ারসিংকে খালাস করে দেন। এই ৮ জুনই জামিনে মুক্ত ছিলেন।
১৯৮৭ সালের জানুয়ারিতে রাজস্থানের সিকরে রূপ কানোয়ারের সঙ্গে বিয়ে হয় মাল সিং দেওরালার এক যুবকের। বাড়ির ৬ ভাই-বোনের মধ্যে অষ্টাদশী রূপ কানোয়ার ছিলেন সকলের ছোট। কিন্তু বিয়ের মাত্র ৮ মাসের মাথায় এক অসুখে সিকর হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাল সিংয়ের। ১৯৮৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর স্বামীর চিতার উপর বসে রূপ কানোয়ারকে সতী করা হয়। তারপর থেকে সতী মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য এই হত্যাকে ব্যবসায় পরিণত হয়।
সতীদাহ বিরোধী আইনে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ৪৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ২৫ জনই বেকসুর খালাস হয়ে যান ২০০৪ সালে। ৮ জনকে বুধবার নির্দোষ সাব্যস্ত করেন বিচারক। চারজন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বাকি ৮ জনের বিচার চলাকালীন মৃত্যু হয়েছে।