ব্রেন ঠিকমতো কাজ করার জন্য মস্তিষ্কের রক্তের প্রয়োজন। কোনো কারণে ব্রেনের কোনো রক্তনালীতে ময়লা (প্লাক) জমলে বা রক্তনালী ফেটে গেলে স্বাভাবিক রক্তচলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। সে কারণে ব্রেন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। যার একাধিক লক্ষণ ফুটে ওঠে শরীরে। প্রাণ নিয়ে পড়তে পারে টানাটানি। এই সমস্যার বিজ্ঞানসম্মত নাম স্ট্রোক।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, স্ট্রোকের মতো একটি ভয়ংকর অসুখকে যেনতেন প্রকারেণ প্রতিরোধ করতে হবে। সেই কাজে সাফল্য পেতে চাইলে সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তার পাশাপাশি এড়িয়ে চলতে হবে ফাস্টফুড, ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার এবং মিষ্টি।
এর পরিবর্তে পাতে জায়গা করে দিতে হবে কয়েকটি খাবার। যেগুলো ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। চলুন তবে আর দেরি না করে জেনে নিই তেমনই পাঁচটি খাবার সম্পর্কে। তাতেই আপনার সুস্থ থাকার পথ প্রশস্ত হবে।
সবুজ শাকই সেরার সেরা
সব ধরনের সবুজ শাকে রয়েছে নাইট্রেটসের ভাণ্ডার। এই উপাদান শরীরে প্রবেশ করে নাইট্রিক অক্সাইডে পরিণত হয়। যা কিনা ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে স্বাভাবিক রক্তপ্রবাহে সাহায্য করে। যার ফলে দূরে থাকে স্ট্রোকের মতো সমস্যা। ২০২১ সালের একটি গবেষণায় বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন পাতে রাখুন সবুজ শাক।
ওয়ালনাটের জুড়ি মেলা ভার
সুস্থ থাকতে চাইলে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে ওয়ালনাট খাওয়া শুরু করুন। এই বাদামে রয়েছে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড, যা কিনা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি বিশেষ ভাগ। এই উপাদান প্রদাহ প্রশমিত করে। বাড়ায় ব্লাড ফ্লো। এমনকি রক্তচাপকে বশে রাখে।
এর পাশাপাশি ওয়ালনাটে উপস্থিত কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমানোর কাজেও একাই একশো। যার ফলে এই বাদাম খেলেই কমবে স্ট্রোকের ঝুঁকি। এমনকি এড়িয়ে চলা যাবে একাধিক অসুখ।
পাতে থাকুক সাইট্রাস ফ্রুট
কমলালেবু, বাতাবিলেবু, শরবতিলেবু হলো সাইট্রাস ফ্রুটের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এসব ফলে রয়েছে ভিটামিন সি, ফোলেট এবং পটাশিয়ামের ভাণ্ডার। এমনকি এগুলোতে অত্যন্ত উপকারী কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্ল্যাভানয়েডসেরও খোঁজ মেলে। যার ফলে যেকোনো ধরনের লেবু খেলে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যায়।
তাই সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে আজ থেকেই লেবু খাওয়া চালু করে দিন। তাতেই হাতেনাতে উপকার মিলবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
মাছের শরণাপন্ন হন
স্ট্রোকের মতো জটিল অসুখের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চাইলে নিয়মিত স্যালমন, টুনা, ম্যাকারেলের মতো মাছ খেতে হবে। এসব মাছে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাণ্ডার। এই উপাদান ব্লাড ফ্লো স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে প্রদাহের প্রকোপ কমানোর কাজেও এর জুড়ি মেলা ভার। যার ফলে স্ট্রোকের ফাঁদ অনায়াসে এড়ানো সম্ভব হয়।
তবে সবার পক্ষে এসব দামি মাছ কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই আপনারা চাইলে রুই, কাতলা, পারশে, কই, ভেটকির মতো পরিচিত সব মাছও খেতে পারেন। তাতে কিছুটা হলেও উপকার পাবেন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিদিন খান দই
বিশেষজ্ঞদের কথায়, দইতে উপস্থিত ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম এবং প্রোবায়োটিকসের গুণে স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই আজ থেকেই নিয়মিত দই খাওয়া চালু করে দিন।
তবে এই দুগ্ধজাত খাবার খেয়ে উপকার পেতে চাইলে মিষ্টি দই এড়াতে হবে। তার বদলে বাজি ধরুন টক দইয়ের উপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কাজটা সেরে ফেললেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
আইএ