‘এমএএসএইচ’, ‘ক্লুট’ ও ‘দ্য হাঙ্গার গেমস’ খ্যাত অভিনেতা ডোনাল্ড সাদারল্যান্ড দীর্ঘদিনের অসুস্থতার পর বৃহস্পতিবার মায়ামিতে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
ডোনাল্ড সাদারল্যান্ডের ছেলে কিফার সাদারল্যান্ড বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আপনাদের জানাচ্ছি যে আমার বাবা ডোনাল্ড সাদারল্যান্ড মারা গেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সিনেমার ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অভিনেতা ছিলেন তিনি। তার অভিনয় করা ভালো, মন্দ বা কুৎসিত কোনো চরিত্রেই কখনও হতাশ হইনি।’
কিফার বাবাকে নিয়ে আরও লিখেছেন, ‘তিনি যা করতেন তা ভালবাসতেন এবং তিনি যা ভালবাসতেন তাই করতেন। কেউ জীবনে এর চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারে না। এমন ভালোভাবে বেঁচে থাকাটাই আসল জীবন।’
এই অভিনেতা এইচবিওর সিনেমা ‘সিটিজেন এক্স’-এ সোভিয়েত কর্মকর্তা হিসেবে অভিনয়ের জন্য এমি অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। পাশাপাশি গোল্ডেন গ্লোব জুটিও অর্জন করেন।
৫০ বছরেরও দীর্ঘ সময়ের ক্যারিয়ারে ১৪০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন ডোনাল্ড সাদারল্যান্ড। এর মধ্যে তাকে শেষ দেখা গেছে লিমিটেড সিরিজ ‘ট্রাস্ট’ এবং এইচবিওর ‘দ্য আনডুয়িং’-এ। ‘ট্রাস্টে’ তিনি অয়েল টাইকুন জে পল গেটি চরিত্রে অভিনয় করেন।
সাদারল্যান্ড ‘দ্য ডার্টি ডজেন’, ‘ডোন্ট লুক নাও’, অলিভার স্টোনের ‘জেএফকে’, অস্কারজয়ী সিনেমা ‘অর্ডিনারি পিপল’, ‘বাফি দ্য ভ্যাম্পায়ার স্লেয়ার’, ‘ব্যাকড্রাফ্ট’ এবং ‘দ্য ইটালিয়ান জব’, ‘ফেলিনিস ক্যাসানোভা’সহ অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
অনেক তরুণ সিনেমাপ্রেমী তাকে ‘দ্য হাঙ্গার গেমসের’ ভিলেন রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনে রাখবেন।
সাদারল্যান্ডের জন্ম নিউ ব্রান্সউইকের সেন্ট জনে। শৈশবে পোলিওসহ বেশ কয়েকটি অসুখে ভুগেছিলেন তিনি। তিনি টরন্টো ইউনিভার্সিটি থেকে প্রকৌশল বিদ্যায় অধ্যয়নের পাশাপাশি নাটক এবং মঞ্চ নিয়েও পড়াশোনা করেন। উভয় ক্ষেত্রেই ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক পাস করেন তিনি।
৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার এই অভিনেতার প্রথম স্ত্রী লোইস হার্ডউইকের সঙ্গে দেখা হয় তার কলেজ জীবনে। ১৯৫৯ সালে বিয়ে করেন তারা। তিনি এরপর লন্ডনে চলে যান, যেখানে তিনি কিছু মঞ্চের কাজ পেয়েছিলেন এবং অবশেষে ১৯৬০-এর দশকে হলিউডে আসেন।
১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি অভিনেত্রী শার্লি ডগলাসকে বিয়ে করেন, যার সঙ্গে তার হরর মুভি ‘ক্যাসল অফ দ্য লিভিং ডেড’ চিত্রগ্রহণের সময় দেখা হয়।
দ্বিতীয় বিয়েও বিচ্ছেদে শেষ হয় এবং ১৯৭২ সালে সাদারল্যান্ড তার তৃতীয় স্ত্রী অভিনেত্রী ফ্রান্সিন র্যাসেটকে বিয়ে করেন, যার সঙ্গে তার তিনটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
সাদারল্যান্ড ২০১৭ সালে একাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস বোর্ড থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার পান এবং অর্ডার অফ কানাডায় ভূষিত হন।
আইএ/ ২১ জুন ২০২৪