কোরবানির আগে যে তথ্যগুলো আপনাকে জানতেই হবে

কোরবানির আগে যে তথ্যগুলো আপনাকে জানতেই হবে

ফিচার ডেস্ক

ধর্মীয় মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে এবং সুস্থ পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় রেখে পশু কোরবানির ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই, গর্ত খুঁড়ে রক্ত পুঁতে ফেলা, অসুস্থ ও ত্রুটিযুক্ত পশু কোরবানি দেওয়া থেকে বিরত থাকাসহ বেশকিছু জরুরি বিষয় মাথায় রাখতে হবে এবং সেভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।

পবিত্র মক্কায় কোরবানি ও পশু জবাইয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে রয়েছে। সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানুষ পরিপূর্ণ ধর্মীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পশু কোরবানি করেন।। এর ফলে দুর্গন্ধ ছড়ানো, রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটা, পশুর চামড়া নষ্ট হওয়া, বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। পশুর চামড়া অত্যন্ত দামি ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিধায় দক্ষ হাতে চামড়া ছাড়ানো হলে এর অযথা ক্ষতি এড়ানো যায়।

এছাড়া স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে কোরবানি হলে পশুর মাংস ময়লা ও জীবানুযুক্ত হবে না এবং পশুর রক্ত, গোবর, নাড়িভুড়ি, হাড় ও অন্যান্য উচ্ছিষ্টাংশ সার, বোতাম, চিরুনি, মৎস খাদ্য, পশু খাদ্যসহ বেশ কিছু শিল্পে ব্যবহার করা যাবে।

কিছু জরুরি বিষয় মনে রাখার ও মেনে চলার অভ্যাস করতে হবে। যেমন- পশু কোরবানি করার পর মোট মাংসের তিনটি ভাগ করে এক ভাগ গরিব-দুঃখীকে, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনকে এবং এক ভাগ নিজে খাওয়ার জন্য রাখতে হয়। তাই পশুটি কেনার সময় সুস্থ এবং বেশি মাংসসম্পন্ন হলে সব পক্ষই লাভবান হয়। ইদুল আজহায় পশুর মালিকের উৎপাদিত ভালো মানের চামড়া দিয়ে বেশি পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। উট, গরু, মহিষ, ভেড়া, দুম্বা ও ছাগল ছাড়া অন্য কোনো পশু দিয়ে কোরবানি দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর; গরু ও মহিষের বয়স কমপক্ষে দুই বছর; ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর হতে হবে।

জবাইয়ের আগে ও পরে করণীয়

কোরবানির পশুকে যে খাবারই খাওয়ানো হোক না কেন, তা জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পাত্রে খাওয়ানো এবং পর্যাপ্ত নিরাপদ পানি পান করানো উচিত। কোরবানির আগের রাত ১০টার পর থেকে কোরবানির পশুকে পানি ছাড়া আর কোনো খাবার খাওয়ানো যাবে না। প্রচুর পরিমাণ পরিষ্কার নিরাপদ পানি পান করাতে হবে। শীতকাল হলে পানি হালকা গরম করে নিতে হবে।

ইদের দিন

নামাজে যাওয়ার আগে পশুকে ভালোভাবে গোসল করাতে হবে। কোরবানির পশুকে নরম সুতা বা পাটের তৈরি রশি দিয়ে বেঁধে শোয়াতে হবে। কোনো অবস্থাতেই নাইলনের দড়ি ব্যবহার করা যাবে না। জবাই করার স্থানটিতে ঠিক গলার নিচে দেড় ফুট গভীর ও দেড় ফুট আড়ে ও লম্বায় একটি গর্ত খুঁড়ে তার মধ্যে পশুর রক্ত ঝরাতে হবে। এমনভাবে পশুকে রাখতে হবে, যাতে গর্তে সম্পূর্ণরূপে রক্ত ঝরে পড়ে। চামড়া ছড়ানোর পদ্ধতি এবং যেসব অস্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে, তা অন্তত তিন দিন আগে প্রস্তুত করে রাখতে হবে।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

পশু জবাই শেষে রক্ত ও উচ্ছিষ্ট যথাযথভাবে অপসারণ করতে হবে। পশুর দেহ থেকে নাড়িভুঁড়ির উচ্ছিষ্ট যেখানে সেখানে ফেললে তা পচে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়ায় এবং পরিবেশ দূষিত হয়ে বিভিন্ন রোগ ছড়ায়। জবাই পর্ব শেষে রক্তের মতো শরীরের যাবতীয় উচ্ছিষ্ট একত্র করে মাটিতে তিন/চার ফুট গর্ত করে তার ওপর চুন, ব্লিচিং পাউডার বা ফাম-৩০ নামক জীবাণুনাশক স্প্রে করে তার ওপর কাঁটাজাতীয় কিছু ডালপালা এবং খড়কুটা দিয়ে ঢেকে শক্ত করে মাটিচাপা দিতে হবে। পশুর গোবর এবং পাকস্থলীর অহজমকৃত বর্জ্য আলাদাভাবে সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে রাখতে হবে। একইভাবে হাটের বর্জ্যও নির্দিষ্ট স্থানে রাখা প্রয়োজন।

সারাবাংলা/এসবিডিই

Scroll to Top