দেশ জুড়ে একযোগে উদযাপিত হয়েছে ইসলাম ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করেন।
সোমবার (১৭ জুন) উদযাপিত হয় পবিত্র ঈদুল আজহা। এ ঈদকে কেন্দ্র করে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে বসে কোরবানির পশুর হাট।
চলতি বছর রাজধানী ঢাকার দুটি সিটি করপোরেশনের আওতায় এবার ২০টি পশুর হাট বসে। এর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অধীনে ৯টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অধীনে ১১টি হাট বসেছে।
রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রের ঘোষণা অনুযায়ী, উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ঈদের দিন সোমবার বলেছিলেন, ৬ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হবে।
অপরদিকে, দক্ষিণ সিটি করপোরেশসেনর মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছিলেন, কোরবানি পশুর বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার আগেই অপসারণ করা হবে। এ সময় তিনি পশুর হাটের বর্জ্য অপসারণের জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।
সোমবার ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হলেও বুধবার (১৯ জুন) দুপুরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন রাজধানীতে নির্ধারিত বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, খিলগাঁও পশুর হাট পরিষ্কার করা হলেও হাটের বিভিন্ন অংশে খড়কুটো পড়ে রয়েছে।
হাটের আশেপাশের বিভিন্ন জায়গায় পশুর রক্ত থাকায় ছড়িয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ। বৃষ্টি হওয়ার কারণে দুর্গন্ধ একটু বেশিই ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে আঁখি নামে এক পথচারী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘রক্তের দুর্গন্ধে হাঁটাচলা করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি হওয়ার কারণে দুর্গন্ধ আরো বেড়ে গেছে’!
এদিকে, কমলাপুর পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, কমলাপুর পশুর হাটের স্টেডিয়াম পাড়ায় যথেষ্ট পরিমাণ খড়কুটো স্তূপ করে রাখা হয়েছে। তবে স্টেডিয়ামের বাইরের অংশ পরিষ্কার থাকতে দেখা যায়।
এরপর কমলাপুরের সাদেক হোসেন খোকা রোড়ে হাটের বাকি অংশে পরিচ্ছন্নকর্মীদের কাজ করতে দেখা যায়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ ধারণ করে।
যাত্রাবাড়ী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, পশুর হাটের অনেক ময়লা-আবর্জনা খালে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এমনিতেই খাল আগে থেকে অপরিষ্কার থাকলেও পশুর হাটের বর্জ্য ফেলার কারণে তা আরো অপরিষ্কার হয়ে গেছে। তবে পশুর হাট অনেকটাই পরিষ্কার করা হয়েছে।
ধোলাইখাল পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাট পরিষ্কার করা হলেও মূল সড়কের মধ্যে পশুর মল পড়ে রয়েছে। এতে করে সাধারণ মানুষের চলাচল এবং মোটরসাইকেল চালাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
মো. হাবিব নামে এক বাসিন্দা বলেন, পশুর হাট বসার আগে রাস্তা অনেকটাই পরিষ্কার ছিল। কিন্তু হাট বসার পরে রাস্তার অবস্থা ভীষণরকম ভয়াবহ হয়ে গেছে। সিটি করপোরেশনের লোকেরা বর্জ্য নিয়ে গেলেও রাস্তার পশুর মল পরিষ্কার করেননি।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খিলগাঁও এলাকার প্রভাতীবাগ, তারাবাগ, রেলগেট এলাকাগুলো পরিষ্কার দেখা গেছে। কোরবানি পশুর বর্জ্য নেই বললেই চলে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রায় প্রতিটি স্থানে ব্লিচিং পাউডার দিতে দেখা গেছে।
১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাহবুবুল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত জীবাণুনাশক পাউডার ছিটাবো।
এর আগে ডিএসসিসির জনসংযোগ বিভাগ সূত্র জানায়, এবার কোরবানির হাট ও কোরবানির জবাই করা পশুর বর্জ্য অপসারণে ১০ হাজার ২শ ৪৭ জন জনবল কাজ করেছে আর কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে ২৪ ঘণ্টার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হলেও প্রথম দিনে তা ১০ ঘণ্টা ১৫ মিনিটে সম্পন্ন করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় দিনে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়ে ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৯টি ওয়ার্ডের বর্জ্য অপসারণ করা হয়।
সব মিলে মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩ হাজার ৬শ ৫৫টি ট্রিপের মাধ্যমে ১৭ হাজার ৬শ ৯২ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।