'সরকার লিজের নামে লুটপাটের আয়োজন করেছে' | চ্যানেল আই অনলাইন

'সরকার লিজের নামে লুটপাটের আয়োজন করেছে' | চ্যানেল আই অনলাইন

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, সরকার জনমত ও স্বাধীনতার চেতনা উপেক্ষা করে রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো বন্ধ করেছে। এখন লিজের নামে লুটপাটের আয়োজন সম্পন্ন করেছে। অতীতে বেসরকারিকরণের নামে যেসব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে তার অভিজ্ঞতা এটাই বলে।

আজ রোববার ৩১ মার্চ বিকেল সাড়ে চারটায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের উদ্যোগে খুলনার খালিশপুর এলাকায় পদযাত্রা শেষে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এই কথা বলেন।

তিনি বলেন, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় খাতে পাটকল চালু না করে সরকার ব্যক্তি মালিকদের সুবিধা দেওয়ার জন্যই এই লিজ কার্যক্রম শুরু করেছে। পাট কল বন্ধ করলেও বিজিএমসি ও তাদের কর্মকর্তাদের বহাল রেখে প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকার অপচয় করা হচ্ছে। অথচ এখনও শ্রমিকদের বকেয়া শতকোটি টাকা পরিশোধ করা হয়নি। বন্ধ পাটকলগুলোতে সুরক্ষা নেই। মেশিনারিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম লুটপাট হচ্ছে। অনেক জায়গায় জায়গা-জমিও লাপাত্তা হচ্ছে ।এখন পুরো জমি লুটপাটের আয়োজন করারই অপেক্ষায় আছে।

এ সময় রুহিন হোসেন প্রিন্স আরও বলেন, সরকার কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, তার চেতনার কথা বলে। কিন্তু সংবিধানের ১৩ নাম্বার অনুচ্ছেদে দেশের অর্থনৈতিক নীতিমালা অনুযায়ী যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিচালনার কথা তার উল্টো পথে অর্থনীতিকে চালিত করা হচ্ছে। দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে সেকেন্ড হোম ও বেগম পাড়া গড়ে তুলেছে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় পাটকল চালাতে ব্যর্থতার দায় সরকারকে নিতে হবে । যারা এই কয়েকটি পাটকল ঠিকমতো চালাতে পারেনা তাদের ক্ষমতায় থাকারও কোনো অধিকার নেই। এদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে রুখে দাঁড়িয়েই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় বাংলাদেশকে অগ্রসর করতে হবে। একমাত্র কমিউনিস্ট এবং বামপন্থীরাই এই কাজটি করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন মুক্তিযুদ্ধের পর এ পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিল এবং আছে , তারা দেশের স্বার্থ রক্ষা করেনি তাদের স্বার্থ রক্ষা করেছে। বিএনপি জামায়াতের আমলে আদমজী পাটকল বন্ধ করা হয়েছে। আর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অবশিষ্ট পাটকলগুলোকে বন্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আজ সারা দুনিয়ায় পাটের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। পাট আমাদের ঐতিহ্য। একসময় আমাদের পরিচয়েরও অন্যতম বাহন ছিল। এর সাথে গ্রামীণ কৃষিসহ পুরো শিল্প ব্যবস্থা জড়িত। এই শিল্পের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের স্বনির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নতুন ভাবে রচনা করতে পারতাম। তিনি আরও বলেন, এখনো সময় আছে বন্ধ পাটকলগুলো আধুনিককরণ করে রাষ্ট্রীয় খাদে চালু করুন। আমরা হিসাব করে দেখেছিলাম, এক্ষেত্রে দুই ,চার হাজার কোটি টাকা খরচ করলেই আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু সম্ভব। আর সরকারের দুর্নীতি লুটপাট ও অব্যবস্থাপনা দূর করতে পারলেই পাটখাত লাভজনক খাতে পরিণত হবে।

রুহিন হোসেন প্রিন্স আরও বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে পদ্মা সেতু চালু হয়েছে কিন্তু তার সুফল এখনো শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। অঞ্চলে শিল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। শ্রমিক মেহনতী মানুষের কাজ নেই। প্রকৃত আয় কমে গেছে। সরকার পদ্মা সেতু চালু করতে পারলেও রাষ্ট্রীয় খাতে পাটকল চালু না করার দায়ে অপরাধী। তিনি ঈদের আগে পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া পরিষদ ও সারাদেশে রেশন ব্যবস্থা এবং ন্যায্য মূল্যের দোকান চালুর দাবি জানান। এছাড়াও তিনি বিগত দিনে এই খাতে দুর্নীতি অবস্থাপনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও আর দেরি না করে বিজিএমই সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করে, নতুনভাবে ঢেলে সাজানোরও দাবি জানান।
একইসাথে হকার উচ্ছেদ ও রিকশা উচ্ছেদের নিন্দা জানিয়ে সবার কর্মসংস্থান নিশ্চিত করারও দাবি জানান তিনি।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সিপিবির খুলনা জেলার সাধারণ সম্পাদক এস এ রশিদ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের মোজাম্মেল হক খান, বাসদের কনা আক্তার, শ্রমিকনেতা নূরুল ইসলাম, আলমগীর কবির, আলমগীর হোসেন প্রমূখ। দৌলতপুর জুট মিল থাকে খালিশপুর জুট মিল ও খালিশপুর এলাকায় পদযাত্রায় বাম জোটের নেতাকর্মীরা ও স্থানীয় শ্রমিক কর্মচারীবৃন্দ যোগ দেন।

Scroll to Top