স্পোর্টস ডেস্ক
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে আতিথ্য দেওয়ার আগে শেষবারের মতো লা লিগায় খেলতে নামে রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষ লা লিগায় দারুণ মৌসুম কাটানো অ্যাথলেটিক ক্লাব বিলবাও। কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে দলের সেরা খেলোয়াড় ভিনিসিয়াস জুনিয়র নিষেধাজ্ঞায় পড়ে বাইরে। তাই তো আন্তর্জাতিক বিরতি থেকে ফিরেই দারুণ এক জয় তুলে নিল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা।
ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচের দুই অর্ধেই একটি করে গোল করেন রদ্রিগো। দীর্ঘদিন ধরে গোল খরায় ভুগছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। ম্যাচের ৮ মিনিটের মাথায় ডি বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার বাঁকানো শটে লক্ষ্যভেদ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৭৩তম মিনিটে ডি বক্সের ভেতর ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে আলতো টোকায় বল জালে জড়িয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করলেন রদ্রিগো। আর তার করা দুই গোলে যথাক্রমে সহয়তা করেছেন ব্রাহিম দিয়াজ এবং জুড বেলিংহাম। তাতেই রিয়াল মাদ্রিদ ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
লিগ টেবিলে চারে থাকা বিলবাওয়ের বিপক্ষে কার্ডের খাঁড়ায় ছিলেন না রিয়ালের আক্রমণভাগের বড় ভরসা ভিনিসিয়াস। লিগে দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এদিন ফেরেন ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম।
চলতি মৌসুম দুর্দান্ত কাটাচ্ছে বিলবাও। জমাট বাধা রক্ষণ এখন পর্যন্ত মৌসুমে লা লিগায় সবচেয়ে বেশি ম্যাচে ‘ক্লিন শিট’ রেখেছে। তবে রিয়ালের বিপক্ষে মাত্র ৮ মিনিটেই গোল হজম করল বিলবাও। ডান দিক থেকে ব্রাহিম দিয়াজের ক্রস বাম দিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আড়াআড়ি এগিয়ে যান তিনি। তার সামনে দুই দিকে ছিল প্রতিপক্ষের তিন-চার জন খেলোয়াড়। বক্সের বাইরে থেকে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারের ডান পায়ের বুলেট গতির শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে।
মাঝে অনেকটা সময় পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনো দল। ৩৪তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে গোলরক্ষক বরাবর শট করেন টনি ক্রুস। পাঁচ মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে ফেদে ভালভার্দের ভলি ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক। ৪৪তম মিনিটে কর্নারে অহেলিয়া চুয়ামেনির হেড পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায়।
প্রথমার্ধে রদ্রিগোর করা দারুণ ওই গোলেই লিড নিয়ে মাঠ ছাড়ল রিয়াল।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেই চতুর্থ মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোল পাননি ব্রাহিম। রদ্রিগোর পাসে ২৪ বছর বয়সী উইঙ্গারের কোনাকুনি নিচু শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৫২তম মিনিটে আরেকটি দারুণ সেভ করে ব্যবধান ধরে রাখেন লুনিন। কাছ থেকে ইনাকি উইলিয়ামসের শট ফিরিয়ে দেন ইউক্রেইনের এই গোলরক্ষক।
ম্যাচের সময় এক ঘণ্টা ছুঁতেই দারুণ এক আক্রমণ করে রিয়াল। তবে বিলবাওয়ের এক ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জে রদ্রিগো বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টির আবেদন করেন রিয়ালের খেলোয়াড়রা। তবে অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। ডাগআউটে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান কোচ আনচেলত্তি।
তবে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে আর বেশি অপেক্ষা করেনি রিয়াল। ৭৩তম মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে মাঝমাঠের কাছাকাছি থেকে বেলিংহামের থ্রু বল ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন রদ্রিগো, সামনে থাকা প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে ডান পায়ের শটে খুঁজে নেন ঠিকানা। চলতি মৌসুমে লিগে রদ্রিগোর গোল হলো ১৫টি, সঙ্গে অ্যাসিস্ট আছে ৮টি। তাতেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের।
ম্যাচের শেষ দিকে দীর্ঘ সাত মাস এসিএল চোটে মাঠের বাইরে থাকা এডার মিলিতাও নামেন। দর্শকরা করতালি দিয়ে তাকে নতুন করে বার্নাব্যুতে আমন্ত্রণ জানান।
লা লিগায় ৩০ ম্যাচে এটি রিয়ালের ২৩তম জয়। সেই সঙ্গে ৬ ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট হলো ৭৫। সমান ম্যাচে ৬৭ পয়েন্ট নিয়ে বার্সেলোনা দুইয়ে আছে, ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে জিরোনা। চার নম্বরে বিলবাওয়ের ৫৬ পয়েন্ট।
সারাবাংলা/এসএস