নির্বাচনের আগে নতুন দলে যোগ দেয়া এবং পুরনো দল ছাড়ার নজির বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও জেগেছিল তেমন অনেক সম্ভাবনা। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নামও জড়ায় সেখানে। দৈনিক পত্রিকা সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ। নতুন দল গঠনের প্রস্তাব পেলেও সেখান থেকে সাকিব ও তিনি যে সরে আসেন, সেটি জানান। আলোচিত বিষয়টি নিয়ে অবশ্য সাকিবের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার দুপুরে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে মেজর হাফিজ খোলাসা করেছেন কী ঘটেছিল নির্বাচনের আগে আর কীভাবেই এলো সাকিবের সম্পৃক্ততা, ‘নির্বাচনের আগে নানা তৎপরতা শুরু হয়। সামরিক বাহিনীর কয়েকজন আমাকে নতুন রাজনৈতিক দল করার কথা বলে। নির্বাচনের আগে সরকারের পক্ষে কয়েকজন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। বিএনএমে যোগ দেয়ার কথাও বলা হয়, আমি যোগ দেইনি। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারাই সাকিব আল হাসানকে আমার কাছে নিয়ে আসেন। রাজনীতিতে আসার ব্যাপারে আমি তাকে নিরুৎসাহিত করি। আমি যোগদান না করায় তিনিও তার পথ বেছে নিয়েছেন।’
‘বিএনপির বেশ কয়েকজন এমপি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, নতুন দলের কথা শুনে। বিএনপি মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতা যারাই যোগাযোগ করেছেন, তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি আমি বিএনপি ছাড়বো না। দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নিতেই আমাকে নিয়ে এমন সংবাদ। আমি নির্বাচন কমিশনেও কাউকে পাঠাইনি। আমি নিজেই বলেছি আমাকে অ্যাপ্রোচ করা হয়েছিল, আমি রাজি হইনি। আমার বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হচ্ছে। সাকিব আল হাসানের দোষ-গুণ থাকতে পারে, কিন্তু খেলার মাঠে সে আনপ্যারালাল।’
হাফিজ বলেন, ‘সাকিব আল হাসান আমার কাছে এসে রাজনীতিতে যোগ দেয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। আমার কাছে উৎসাহ না পেয়ে সে চলে যায়। নির্বাচনের ৪ থেকে ৫ মাস আগে আমার কাছে আসে সাকিব। সেসময় তার সঙ্গে কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ছিলেন।’
নির্বাচনের আগে নতুন দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে (বিএনএম) যোগ দিতে মেজর হাফিজের হাতেই আবেদন ফরম তুলে দিয়েছিলেন সাকিব। এ ধরনের একটি ছবিও সমকালের প্রতিবেদনে ছাপা হয়। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিটি নিয়ে মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যম মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করে। সাকিবের সঙ্গে আমার ছবিটি নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে তা জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নিতে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি এমনকিছু করিনি যার জন্য লজ্জিত হতে হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাফিজ উদ্দীন বলেন, ‘বিএনএম-এর সাধারণ সম্পাদক তাকে (সাকিব আল হাসান) নিয়ে এসেছিলেন। জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নাই তাদের। তারাই সরকারের আনুকূল্যে দল করেছে। চার-পাঁচজন লোক। ওইটা বিএনএমের ফরম ছিল সম্ভবত।’