রমজানে রোজা রেখে সারাদিন অভুক্ত থাকার পর অনেকেই ইফতারে ভুল খাবার খেয়ে ফেলেন। শুধু ইফতারেই নয় বরং রাতে এমনকি সেহরিতেও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে শরীরে পড়ে বিরূপ প্রভাব। রমজান মাসে ধর্মীয় বিধি-বিধানের পাশাপাশি দৈনন্দিন কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য সুস্থ থাকা খুবই জরুরি। একে তো প্রচণ্ড গরম তার উপরে আবার রোজা রেখে ভুল খাদ্যাভাসের কারণে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তবে চাইলেই কিছু বিষয় মেনে রমজানেও থাকতে পারেন সুস্থ।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার পর সেহরি ও ইফতারে খাদ্য দ্রব্য বাছাই করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। এ সময় জীবযাপনে কিছুটা পরিবর্তন আসেন,পরিবর্তন আসে নিয়মিত কাজের ধরনেও। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ রুবাইয়া রীতি জানান, আপনার খাদ্যের উপর নির্ভর করছে রমজানে ফিট ও সুস্থ থাকার বিষয়টি। রমজানে ১০টি বিষয় মেনে চললে থাকতে পারবেন সুস্থ-
১. সেহরিতে মাছ ডাল ভাত আদর্শ খাবার। মাংস খেতে চাইলে ভোররাতে গরুর মাংস এড়িয়ে মুরগী খেলে ভালো হবে। তবে শাকসবজি ও ডাল শরীরের জন্য ভালো হবে। এছাড়া দই, চিড়া, কলা অথবা ভাত- রুটি, মিক্সড সবজি, মাছ, ডিম খেতে পারেন। এতে হজম শক্তি বাড়াবে।
২. রোজায় সুস্থতা রক্ষার্থে সেহরি করবেন নিয়মিত। সেহরিতে আমিষ জাতীয় খাবারের চেয়ে শর্করা জাতীয় খাবার বেশি থাকলে সারাদিনের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবেন। অতিরিক্ত পেট ভরে খাবেন না। যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করবেন। সম্ভব হলে ২/১টা ফল রাখবেন সেহরির মেন্যুতে।
৩. সেহেরির জন্য রাতে কোনও কিছুই না খেয়ে ঘুমাবেন না। অন্তত পক্ষে হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। যেমন সবজি ও মাছ ইত্যাদি। অথবা ঘুমানোর আগে ১ গ্লাস দুধ পান করুন।
৪. ইফতারের খাবারে খেজুর, শরবত, তিন রকমের ফল, সালাদ, ছোলা, ডিম সেদ্ধ, মুড়ি ইত্যাদি রাখুন। এছাড়া পানি, ফল, চিড়া, রুটি, ভাত, সবজি, ডাল, ডিম, হালকা খিচুড়ি খাওয়া যেতে পারে। এসব খাবার শরীরে শক্তি বাড়ায়।
৫. নিয়মিত যেসব খাবার খান রোজার সময়েই সেগুলোই তার জন্য যথেষ্ট। তবে সারাদিন রোজা পালন শেষে পানি খেতে হবে পর্যাপ্ত। যাদের চা কফি পানের অভ্যাস আছে তারা ইফতারের পর লাল চা বা গ্রিন টি পান করুন।
৬. ফ্রিজের ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলুন। ঠান্ডা পানি খেলে হজমশক্তি কমে যায়। তবে দেহের সুস্থতার জন্য পানির কোনো বিকল্প নেই। ঘুমানোর আগে অন্তত ৮ গ্লাস পানি পান করবেন, যেন পানিস্বল্পতা দেখা না দেয়।
৭. দাবদাহের দিনগুলোয় দুপুরে যতটা সম্ভব বাইরে না থাকার চেষ্টা করবেন। বৃষ্টি হলে অবশ্যই ছাতা নিয়ে বের হবেন। ঘামে ভিজে সর্দি-কাশি হলে তা রোজা রাখার অন্তরায় হতে পারে।
৮. রোজায় ভারী ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। এতে করে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং পরবর্তী কিছু দিনের রুটিন ব্যায়ামে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। রুটিন বজায় রাখার জন্য যতটুকু ব্যায়াম করা যায়, তা করে যান।
৯. তারাবির সালাত আদায় করুন। ব্যায়াম হবে,শরীরও সুস্থ থাকবে। এছাড়া কম শারীরিক পরিশ্রম লাগে, কিন্তু উপকারী এমন কাজগুলো বেছে নিন। যেমন- আধা ঘণ্টা করে নিয়মিত সময়ে হাঁটাহাঁটি করা।
১০. আপনি শারীরিকভাবে পারফেক্ট থাকলেও মনে রাখবেন, রোজা আপনার দেহকে কিছুটা দুর্বল করে দিতে পারে। আর তাই, সুস্থতা বজায় রাখতে পুষ্টিকর খাবারের মেন্যু তৈরি করবেন। পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ডায়েট চার্ট অনুসরণ করুন।
The post রমজানে সুস্থ থাকার সেরা ১০ টিপস appeared first on Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment.