ইসলামবাদ, ১৬ মার্চ – পাকিস্তানের উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় একটি নিরাপত্তা চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলায় দুই কর্মকর্তাসহ সাত সেনা নিহত হয়েছেন। এ সময় ছয় সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানিয়েছে।
সামরিক বাহিনীর মিডিয়া শাখার মতে, এদিন ছয়জন সন্ত্রাসীর একটি দল উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার মির আলি এলাকার একটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালায়।
সেনারা অনুপ্রবেশের প্রাথমিক প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার সঙ্গে সংগে সন্ত্রাসীরা একটি বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি চৌকিতে ঢুকিয়ে দেয়। এরপর একাধিক আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে এবং একটি ভবনের একটি অংশ ধসে পড়ে। এতে পাঁচজন নিহত হয়। প্রাথমিক আক্রমণে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন জেলা খাইবারের বাসিন্দা হাবিলদার সাবির, নায়েক খুরশিদ, সিপাহি নাসির, রাজা ও সাজ্জাদ।
আইএসপিআর আরো জানিয়েছে, পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাশিফের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনার ছয় সন্ত্রাসীকে হত্যা করে। তবে তীব্র গোলাগুলিতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ কাশিফ আলি (৩৯) এবং ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ আহমেদ বদর (২৩) নিহত হন।
সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং বলেছে, ওই এলাকায় উপস্থিত অন্য কোনো সন্ত্রাসীকে নির্মূলের অভিযান চালানো হচ্ছে, যেহেতু পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের হুমকি নিশ্চিহ্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
২০২২ সালের নভেম্বরে নিষিদ্ধ জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান দেশটির সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শেষ করার পর ২০২৩ সালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে।
আইএসপিআরের তথ্য অনুসারে, এই মাসের শুরুতে উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি পৃথক অভিযানে ১০ জঙ্গি নিহত হয়েছে। গত মাসে ডেরা ইসমাইল খানের একটি থানায় গভীর রাতে হামলা প্রতিহত করা হয়। বন্দুকধারীরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায়। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে তেহরিক-ই-জিহাদ পাকিস্তানের (টিজেপি) জঙ্গিরা ডেরা ইসমাইল খানের দারাবান এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি কম্পাউন্ডে হামলা চালালে ২৩ সেনা নিহত এবং ৩০ জনেরও বেশি সেনা আহত হয়।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের বার্ষিক নিরাপত্তা প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তান ২০২৩ সালে ৭৮৯টি সন্ত্রাসী হামলা ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে এক হাজার ৫২৪টি সহিংসতা সম্পর্কিত প্রাণহানি এবং এক হাজার ৪৬৩ জন আহত হয়েছে, যা ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড।
কেপি ও বেলুচিস্তান ছিল সহিংসতার প্রাথমিক কেন্দ্র, যেখানে সমস্ত প্রাণহানির ৯০ শতাংশেরও বেশি এবং সন্ত্রাসবাদ ও নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানসহ ৮৪ শতাংশ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ
আইএ/ ১৬ মার্চ ২০২৪