মেডিকেল ভর্তিতে আসনসংখ্যা বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করায় চিকিৎসকদের লাইসেন্স স্থগিত করা শুরু করেছে সাউথ কোরিয়া। ধর্মঘটী প্রায় ১০ হাজার জুনিয়র চিকিৎসকদের অনেকের লাইসেন্স এরইমধ্যে স্থগিত করা হয়েছে। কাজে ফেরার সরকারি নির্দেশের পরও যারা কাজে যোগ না দিয়ে প্রতিবাদ-ধর্মঘট করছেন সোমবার থেকে তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা শুরু করেছে দেশটির সরকার।
সংবাদ মাধ্যম ডয়েচ ভেলে জানিয়েছে, (৪ মার্চ) সোমবার সাউথ কোরিয়ার উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী পার্ক মিন-সু এক সংবাদ সম্মেলনে জানান- কাজে ফেরার সরকারি নির্দেশের পর মাত্র ৫৬৫ জন চিকিৎসক কাজে যোগ দিয়েছেন। এখনও প্রায় ৯ হাজার চিকিৎসক ধর্মঘট করছেন। সোমবার থেকে সরকার আইনি ব্যবস্থার প্রয়োগ শুরু করছে। যদি তারা সরকারের কাজে ফেরার নির্দেশ লঙ্ঘন করেন তাহলে ৩ মাসের জন্য লাইসেন্স স্থগিত করা হবে।
সাউথ কোরিয়ার শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা দেশটিতে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রতি বছর ব্যাপকভাবে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার সরকারি পরিকল্পনার প্রতিবাদ করছেন। কারণ, উন্নত দেশগুলোর মধ্যে সাউথ কোরিয়ায় ডাক্তারের তুলনায় রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে কম এবং দেশটিতে বয়স্ক নাগরিকের সংখ্যা বেশি। তাই এক দশকের মধ্যে দেশটিতে জনসংখ্যার তীব্র ঘাটতি দেখা যাবে।
ধর্মঘটরত চিকিৎসকেরা বলছেন, মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়লে মেডিকেল শিক্ষার মানের অবনতি হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। নতুন চিকিৎসকেরা প্লাস্টিক সার্জারি ও ডার্মাটোলজির মতো অপ্রয়োজনীয় সেবায় ঝুঁকতে পারেন বলেও মনে করছেন ধর্মঘটরত চিকিৎসকেরা। সাউথ কোরিয়ায় ১ লাখ ৪০ হাজার চিকিৎসক আছেন। সিনিয়র চিকিৎসকেরা ধর্মঘট না করলেও তাদের অনেকে ধর্মঘটের সমর্থনে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
তবে সমালোচকেরা বলছেন, সাউথ কোরিয়ার ধর্মঘটরত চিকিৎসকেরা মূলত তাদের বেতন ও স্ট্যাটাস রক্ষায় বেশি আগ্রহী। জরিপ বলছে, তিন-চতুর্থাংশ মানুষ চিকিৎসকদের ধর্মঘটের বিরোধিতা করছেন। সাউথ কোরিয়ার আইন অনুযায়ী, সরকার মেডিকেল খাতের পেশাজীবীদের ধর্মঘট বন্ধ করার নির্দেশ দিতে পারে বা তাদের লাইসেন্স স্থগিত করতে পারে, এমনকি সর্বোচ্চ ৩ বছরের জেল ও জরিমানা করতে পারে।