ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ডাকঘরের বিস্তীর্ণ নেটওয়ার্ক, বিশাল অবকাঠামো ও জনবল ব্যবহার করে প্রত্যন্ত এলাকাসহ দেশের প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় স্মার্ট ডাক সেবা পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, সময়ের চাহিদা মেটাতে ডাকঘরকে মেইল সার্ভিসিং থেকে ডেলিভারি সার্ভিসিংয়ে রূপান্তরের পাশাপাশি অন্যদের সাথে অবকাঠামো শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নত ডাকসেবা প্রদানের সুযোগ রয়েছে। সে সুযোগ কাজে লাগাতে তিনি সংশ্লিষ্টদের পথনকশা তৈরির নির্দেশ প্রদান করেন।
সোমবার (৪ মার্চ) ঢাকায় ডাকভবনে স্মার্ট ডাকঘর নির্মাণে ডাক অধিদপ্তর, এটুআই এবং ইক্যাব এর সাথে এক পরামর্শক সভায় এ নির্দেশনা প্রদান করেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ডিজিটাইজেশনের প্রভাবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চিঠি আদান-প্রদানের যুগ শেষ হয়ে গেলেও পণ্য পরিবহনে ডাকঘর হবে সবচেয়ে নির্ভর যোগ্য সেবা প্রতিষ্ঠান। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের ঠিকানা আমরা ২০২১ সালে অতিক্রম করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের আরেকটি স্বপ্নের ঠিকানায় ২০৪১ সালের মধ্যে পৌঁছানোর অভিযাত্রা শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ কম খরচে ঘরে বসেই ডিজিটাল শপ থেকে কেনা পণ্য যাতে হাতে পান সেই লক্ষ্যে স্মার্ট ডাক বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। স্মার্ট ডাক ব্যবস্থায় দেশের ১০ হাজার পোস্ট অফিসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন হাবের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
তিনি আরো বলেন, স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং পদ্ধতিতে ক্রেতার পণ্য কোথায় আছে তাও সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে। প্রতিটি ডাক ঘরে ই-কমার্সের জন্য একটি আলাদা কর্নার থাকবে যেখান থেকে পণ্য শর্টিং, ট্র্যাকিং এবং দ্রুততম সময়ে ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়া হবে।
স্মার্ট ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারলে ডাক সেবায় ডাকঘরের সমকক্ষ কোন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া দুরূহ হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক অধিদপ্তর পিছিয়ে থাকতে পারে না।
ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরুণ কান্তি সিকদার, এটু আই এর প্রকল্প পরিচালক মামুনুর রশিদ, পলিসি এডভাইজার আব্দুল বারী, ইক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে মন্ত্রী ঢাকার গুলশানে টেলিটক সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন এবং কর্মকর্তাদের সাথে টেলিটকের গ্রাহক সেবার মানোন্নয়নে গৃহীত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করেন। প্রতিমন্ত্রী অন্যান্য মোবাইল অপারেটরদের সাথে টাওয়ার শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে টেলিটক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের অগ্রগতি এবং টেলিটকের বিদ্যমান ৫ হাজার ৬শত টাওয়ারের কর্মক্ষমতা বিশেষ করে ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়ানোর লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চান। টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান এসময় পাওয়ার প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী আগামী ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে টেলিটক মোবাইল ইন্টারনেটের একটি বিশেষ সাশ্রয়ী প্যাকেজ তৈরি এবং ৭ মার্চ থেকে তা চালু করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।