ঢাকা, ০৪ মার্চ – বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় রোববার আবারো প্রথম স্থানে উঠে এসেছে রাজধানী ঢাকা। এদিন সকালে আইকিউএয়ারের শহরটির বাতাসের মানসূচকে স্কোর ছিল ২১১, যা বায়ুদূষণে বিশ্বের ১০০ শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বায়ুর এ মান খুব অস্বাস্থ্যকর হিসেবে ধরা হয়।
বায়ুদূষণের তালিকায় বারবার শীর্ষে আসায় তা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়।
তবে বাস্তবায়নে সমন্বিত উদ্যোগ না থাকলে এসব নির্দেশনা কোনো কাজে আসবে না বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদেরা।
সরকারের আদেশে ইউটিলিটি লাইন মেরামত, দোকানপাটের ধুলা ঝাড়ু দিয়ে রাস্তায় না ফেলাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব (সিটি করপোরেশন-১) মোহাম্মদ সামসুল ইসলামের স্বাক্ষর করা এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি দেশের সব সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব (নগর উন্নয়ন) নুরে আলম ছিদ্দীকী বলেন, বায়ুদূষণ রোধে আমরা বেশকিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এগুলো বাস্তবায়নে সিটি কর্পোরেশণ ও পৌরসভাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নগরবিদ ও স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, দূষণের দিক দিয়ে আমরা বারবার কেন শীর্ষে থাকি তা নিয়ে সরকার কমবেশি অবগত। দেশের মোট উন্নয়নকাজের ৬০-৭০ শতাংশই সরকারিভাবে করা হয়। সেখানে সব প্রকল্পেই পোড়ামাটির ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।
অন্যান্য নির্মাণ উপকরণ উৎপাদন, পরিবহন ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে নীতিমালা কেউ মানছে না। সিটি কর্পোরেশনগুলো তাদের তথ্যমতে, সংস্থাগুলো ৬০ শতাংশ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে থাকে। বাকি ৪০ শতাংশ বর্জ্য থাকে ব্যবস্থাপনার বাইরে। এ বিশাল পরিমাণ বর্জ্য পরিবেশদূষণ করে থাকে। এ ছাড়া জনগণ তার আঙিনা পরিষ্কারের বিষয়েও দায়বদ্ধ না। তারা নিজের জায়গাটুকু ঝাড়ু দিয়ে ময়লা রাস্তায় ফেলে দেয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাস্তার সংস্কারকাজ, ড্রেনের নর্দমার বর্জ্য এবং বিভিন্ন মার্কেট বা দোকানপাটের ময়লা-আবর্জনা ঝাড়ু দিয়ে রাস্তায় না ফেলার জন্য পরিবেশমন্ত্রী স্থানীয় সরকার বিভাগে গত মাসের শুরুর দিকে একটি চিঠি দেন। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে বলা হয়, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার আওতাধীন পরিচালিত নির্মাণকাজের সময় ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে পানি ছিটানো, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে পরিবহন ও মজুত করা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ধূলিদূষণ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত বেষ্টনীর ব্যবহার করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাস্তার পার্শ্ববর্তী ড্রেন বা ড্রেন থেকে বর্জ্য তুলে উন্মুক্তভাবে ফেলে না রেখে দ্রুত পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তার উন্নয়নকাজ যথাসম্ভব রাত্রিকালীন সম্পন্ন করা ও নির্ধারিত স্থানটি বেষ্টিত রেখে দৈনিক একাধিকবার পানি ছিটানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয় তখন। সব ক্ষেত্রে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ না করলে কোনো সুফল আসবে না।
সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ
আইএ/ ০৪ মার্চ ২০২৪