বুরকিনা ফাসোতে হামলায় নারী-শিশুসহ ১৭০ জনের প্রাণহানি – DesheBideshe

বুরকিনা ফাসোতে হামলায় নারী-শিশুসহ ১৭০ জনের প্রাণহানি – DesheBideshe

ওয়াগাদুগু, ০৪ মার্চ – পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে হামলায় নারী ও শিশুসহ প্রায় ১৭০ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির তিনটি গ্রামে চালানো হামলায় প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। তবে হামলার পেছনে কোন গোষ্ঠী জড়িত তা জানা যায়নি। সোমবার (৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুরকিনা ফাসোর তিনটি গ্রামে হামলা চালিয়ে নারী ও শিশুসহ প্রায় ১৭০ জনকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে বলে দেশটির একজন পাবলিক প্রসিকিউটর জানিয়েছেন। কমসিলগা, নর্ডিন এবং সোরো নামে তিনটি গ্রামে হামলা চালিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হয়। এই ঘটনায় আক্রমণকারীদের খুঁজে বের করতে সাহায্য করার জন্য সাক্ষীদের এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছেন প্রসিকিউটর অ্যালি বেঞ্জামিন কুলিবালি।

আলাদাভাবে বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনী ‘শহুরে কেন্দ্রগুলোতে আক্রমণসহ’ ইসলামপন্থিদের আক্রমণের বর্ধিত ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী ২০২২ সালে ক্ষমতা দখল করে। তবে বুরকিনা ফাসোর এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি এলাকা বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

কুলিবালি বলেছেন, তিনি গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ইয়াতেঙ্গা প্রদেশে গ্রামে হামলার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছেন। বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে কয়েক ডজন নারী ও শিশু রয়েছে। তবে হামলার পেছনে কোন গোষ্ঠী জড়িত তা জানা যায়নি। তবে শহরগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বড় আকারের সিরিজের আক্রমণের শঙ্কা’ রয়েছে।

অবশ্য এই হামলা দেশটিতে সাম্প্রতিক সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করা হচ্ছে না। সম্প্রতি দেশটির একটি গির্জার পাশাপাশি একটি মসজিদ এবং সেনা ঘাঁটিতে হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে শুক্রবার দেশটির সেনাপ্রধান জঙ্গিদের আত্মঘাতী হামলার ঝুঁকি বাড়ার কারণে সৈন্যদের সতর্ক থাকার জন্য বলেছিলেন।

মানবিক কর্মীরা বলছেন, বুরকিনা ফাসোতে যে সংকট চলছে তা বিশ্বের অন্যতম অবহেলিত সংকট। বছরের পর বছর ধরে ব্যাপক নিরাপত্তাহীনতার কারণে ২০ লাখেরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাস্তুচ্যুত মানুষে পরিণত হয়েছেন।

জাতিসংঘের ধারণা, পাঁচ বছরের কম বয়সী সকল শিশুর এক-চতুর্থাংশ ক্ষুধার কারণে বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। যদিও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই বছর আগে সামরিক বাহিনী বুরকিনা ফাসোর ক্ষমতা দখল করে, তবুও দেশটিতে এখনও সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইন্সটিটিউট ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড পিস জানায়, ‘সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রস্থল এখন চূড়ান্তভাবে মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার মধ্য সাহেল অঞ্চলে স্থানান্তরিত হয়েছে।’

উল্লেখ্য, বুরকিনা ফাসোর এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি এলাকা বর্তমানে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। দেশটির কর্তৃপক্ষ আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের সাথে যুক্ত ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এসব গোষ্ঠী সাহেল অঞ্চলের বিশাল অংশ দখল করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ০৪ মার্চ ২০২৪

Scroll to Top