ওজন কমাতে সুপার ফুড- চিয়া সিড

ওজন কমাতে সুপার ফুড- চিয়া সিড

লাইফস্টাইল ডেস্ক

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বাস্থ্যপ্রেমীদের মধ্যে চিয়া সিডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। একে ডাকা হচ্ছে সুপার ফুড নামে। স্যালিভা হিসপানিকা নামের এক জাতের পুদিনাগোত্রীয় ফুলগাছের বীজ হল চিয়া সিড। অনেকেই মনে করেন চিয়া সিড ওজন কমাতে দারুণ কার্যকরী। অনেকেই জানতে চান, আসলেই চিয়া সিডে ওজন কমে কি না! চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার উপায়গুলোও জানাবো আজ।

যেভাবে ওজন কমায় চিয়া সিড

চিয়া সিডে উচ্চমাত্রার প্রোটিন ও খাদ্যআঁশ রয়েছে যা ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। প্রোটিন ও খাদ্যআঁশ দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে ফলে ঘন ঘন ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমে।
প্রতি আউন্স চিয়া সিডে ৯.৭৫ গ্রাম খাদ্যআঁশ ও ৪.৬৯ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। সেখানে খাদ্যশক্তি রয়েছে ১৩৮ ক্যালরি।
তবে ওজন কমানোর সহায়ক খাবার হিসেবে চিয়া সিডের জনপ্রিয়তা বাড়লেও এবিষয়ে নিশ্চিত করে বলার মত বৈজ্ঞানিক গবেষণা এখনও নাই। তবে বেশকিছু গবেষণায় দেখা গেছে চিয়া সিডের পাশাপাশি কম ক্যালরিসম্পন্ন খাবার গ্রহণ করলে ওজন কিছুটা কমে।

ওজন কমানোর গুণাবলী ছাড়াও প্রতি আউন্স চিয়া সিডে আছে-

১৭৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
৯৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম
২.১৯ মিলিগ্রাম লোহা ও ১১৫ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম

এছাড়াও এতে নানারকম অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। ওমেগা-৩ ডিপ্রেশন কমানো, ছোটবেলার অ্যালার্জিসহ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় বলেও ধারণা করা হয়। এবিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা হলেও তবে নিশ্চিত করে বলা যাবে।

চিয়া সিডের স্বাস্থ্যগুণ

গবেষণায় চিয়া সিডের কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারতা দেখা গেছে। সেগুলো হল-

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় ইনফ্ল্যামেশন কমায়
রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে যা ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে বলে মনে করা হয়
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও অন্ত্রকে সুস্থ রাখে
রক্তচাপ কমায়
রক্ত জমাট (ব্লাড ক্লট) বাঁধার প্রবণতা কমায় ও রক্তকে পাতলা রাখে
কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিকঠাক রাখে
যেভাবে চিয়াসিড খাবেন

শুধু যেমন খাওয়া যায় তেমনি অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়া যায় এই বীজ। তবে দিনে এক আউন্স পর্যন্ত খাওয়াই ভালো।
সকালে স্মুদি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এক চা চামচ চিয়া সিড যোগ করতে পারেন
সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়
গুড়া করে ময়দা বানিয়ে অন্য খাবারের (ময়দা, আটা বা বেসনের তৈরি) সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায়
বিশ মিনিট থেকে আধঘন্টা ভিজিয়ে রেখে খাওয়া যায়। ভেজানো চিয়া সিড শুধু খেতে না পারলে সঙ্গে লেবুর রস, মধু বা ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়েও খেতে পারেন
এছাড়াও দুধ, দই, ওটমিল, কর্নফ্লেক্স বা মিউজলির সঙ্গেও মিশিয়ে খেতে পারেন চিয়া সিড

মনে রাখা জরুরি

চিয়া সিডকে মোটামুটি নিরাপদ খাবারই বলা যায়। এর তেমন কোন সাইড এফেক্ট নাই বললেই চলে। তবে যারা রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ গ্রহণ করছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি খাবেন না। আবার অতিরিক্ত আঁশসমৃদ্ধ হওয়ায় পরিমাণে বেশি খেলে এটি গ্যাসজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।রক্তচাপ এবং হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখলেও চিয়া সিডের রক্ত পাতলা করার গুণ কিছু ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। এটি সহজেই রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ায় অনেকসময়। কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যালার্জিও দেখা দিতে পারে যা খুব একটা কমন নয় অবশ্য।

বর্তমানে মানুষ অনেক বেশি স্বাস্থ্যসচেতন। তারা এখন বুঝেশুনে খেতে চায়। এই কারণেই চিয়াসিডের মত সুপার ফুডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে দিনদিন। তবে ওজন নিয়ন্ত্রণ হোক বা সুস্থ থাকার জন্য, অবশ্যই পরিমানে কম খাওয়া উচিৎ। আর কোন স্বাস্থ্যঝুকি থাকলে চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনেই খান চিয়া সিড। তবে মনে রাখা উচিৎ, কোন সুপারফুডই আপনাকে সুস্থ রাখবে না যদি না নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করেন ও পরিমিত পরিমাণ স্বাস্থ্যকর খাবার খান।

সূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে

সারাবাংলা/এসবিডিই

Scroll to Top