তিন বছরে গড়াল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ – DesheBideshe

তিন বছরে গড়াল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ – DesheBideshe

মস্কো, ২৪ ফেব্রুয়ারি – রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ আজ শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুই বছর পূর্ণ করে তিন বছরে পা দিয়েছে। যদিও এই সময়ে ব্যাপক বদল এসেছে রাশিয়ার চিত্রপটে। কিন্তু সহসাই এ যুদ্ধ থামবে এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইউক্রেন বা রাশিয়া কারো পক্ষ থেকেই শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।
মস্কো এবং কিয়েভ উভয়ই তাদের অবস্থানে অনড়। মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ইউক্রেন যথাযথ রাষ্ট্র নয় এবং তাদের লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার সামরিক অভিযান চলবে। অন্যদিকে ইউক্রেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানা বজায় থাকতে হবে এবং তারা রাশিয়ান সেনাদের হটিয়ে দেবে এমন মনোভাব পোষণ করছে কিয়েভ।

এমন বাস্তবতায় রাশিয়া-ইউক্রেন কোনো দেশই আত্মসমর্পণ করবে বলে মনে হয় না। এছাড়া পুতিনই আবার ক্ষমতায় থাকবেন বলে মনে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের ধারনা এটা একটা দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ হতে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা থিঙ্ক ট্যাঙ্ক গ্লোবসেক বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সম্ভাব্য ফলাফল পর্যালোচনায় সবচেয়ে বেশি যা উঠে এসেছে, তা হলো- ২০২৫ সালেরও বেশি সময় পর্যন্ত যুদ্ধটা দীর্ঘায়িত হবে, যাতে দু’পক্ষেরই প্রচুর হতাহতের ঘটনা ঘটবে এবং ইউক্রেন মিত্রদের অস্ত্র সহায়তার ওপর নির্ভর করে থাকবে।

এই যুদ্ধের ফলে বিশ্বের অন্যান্য অংশেও সংঘাত বাড়বে, যেমন মধ্যপ্রাচ্য, চীন-তাইওয়ান এবং বলকানদের সাথে রাশিয়ার উত্তেজনা ছড়াবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই যুদ্ধ আরো দীর্ঘ হবে এবং দু’পক্ষেরই হতাহতের সংখ্যা বাড়বে। আরও যে দু’টি সম্ভাব্য ফলের কথা উঠে এসেছে, যেগুলোর সম্ভাবনা খুবই সামান্য, তার একটা হলো- ইউক্রেনে সামরিক দিক থেকে কিছুটা অগ্রসর হবে, কিন্তু যুদ্ধে শেষ করার মতো পরিস্থিতিতে যেতে পারবে না। অথবা, ইউক্রেনের মিত্রদের সমর্থন ফুরিয়ে আসবে এবং তারা একটা সমঝোতায় যেতে বাধ্য করবে।

বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কী হয় এবং একই সাথে অন্যান্য যুদ্ধ বিশেষত ইসরায়েল-হামাস সংঘাত কোনদিকে গড়ায় এবং সেটা ইউক্রেন ও রাশিয়ার মিত্রদের কীভাবে প্রভাবিত করে, সেসবের ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করছে।

সম্প্রতি মিউনিখের এক নিরাপত্তা সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইউক্রেনকে ‘কৃত্রিম অস্ত্র সংকটের’ মধ্যে ফেলে রাখলে তাতে লাভবান হবে রাশিয়া। যদি পশ্চিমা দেশগুলো তার পাশে না দাঁড়ায় তাহলে পুতিন আগামী কয়েক বছরে বিশ্বের আরও অনেক দেশের জন্যই ‘বিপর্যয়’ বয়ে নিয়ে আসবে।

দ্য রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট (রুসি) থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বলছে, রাশিয়া খুব সফলভাবে তাদের অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা শিল্পে সাময়িক ধাক্কা সামলে তাদের সামরিক উৎপাদন বাড়িয়ে নিয়ে একটা দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েছে। ইউরোপ এটার সাথে তাল মেলাতে পারেনি বলেও মনে করছে তারা।

সম্প্রতি জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এস্তোনিয়ার গোয়েন্দা বিভাগ শঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, আগামী দশকের মধ্যেই রাশিয়া কোনো নেটো রাষ্ট্রে হামলা করে বসতে পারে।’ এই শঙ্কা নেটো এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে নতুন করে ভবিষ্যৎ ভাবনায় ফেলেছে।

সূত্র: ডেইলি-বাংলাদেশ
আইএ/ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

Scroll to Top