৬ নিয়ম মেনে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পান

৬ নিয়ম মেনে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পান

লাইফস্টাইল ডেস্ক

আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। শীতের শুরুর এই মৌসুমে অনেকের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও বৃদ্ধরা এই সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হন। শরীরে ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার ও পানির যথেষ্ট অভাবের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। তবে স্নায়ুতন্ত্র ও হরমোনের সমস্যার কারণেও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে খাবার হজমে সমস্যা হয়। বমি ভাবও হতে পারে। অতিরিক্ত কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে পরবর্তীতে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যা শারীরিক কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই এই সমস্যায় যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে খাবারদাবারের প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগী হতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। কিছু খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, এই খাবারগুলো তাদের জন্য বেশ উপকারি।

পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে

আমাদের শরীরের তিন ভাগের দুই ভাগই পানি। সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে তাই পানি পানের বিকল্প নেই। প্রাপ্তবয়স্ক ও পূর্ণবয়স্ক নারী-পুরুষের প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। প্রয়োজনের তুলনায় পানি কম খেলে শরীরের আর্দ্রতা কমে যায় এবং পাকস্থলির সমস্যা দেখা দিতে পারে। পানি এবং ফলের জুস কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুবই উপকারি।

আঁশযুক্ত খাবার খান

নিয়মিত ফাইবার বা আঁশজাতীয় খাবার না খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অন্তত ২০ থেকে ৩৫ গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার থাকা উচিত। আপেল, গাজর, কমলা, ওটমিল, শিমজাতীয় খাবার (মটর, শিম, ডাল) ও ডুমুরে প্রচুর পরিমাণে আঁশ আছে।

প্রক্রিয়াজাত খাবার বা শস্যের পরিবর্তে পূর্ণশস্য হিসেবে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন লাল চাল, আটা ও পাস্তা খেতে পারেন। ফলের জুস করার পরিবর্তে আস্ত ফল বিচিসহ খাওয়া ভালো। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ পাওয়া যায়।

মধু ও লেবু উপকারি

উষ্ণ গরম পানিতে মধু ও লেবু মিশিয়ে সকালবেলা খালি পেটে খেতে হবে। এই উপাদান দুটি পেটের সমস্যা দূর করে এবং হজমে সহায়তা করে। এছাড়া শরীর থেকে টক্সিন বা ক্ষতিকর উপাদান বের করতে লেবু অত্যন্ত উপকারি।

টক দই খাওয়া ভালো

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে টক দইয়ের জুড়ি নেই। এতে প্রোবায়োটিক আছে, যা হজমের সমস্যা দূর করে। নিয়মিত টক দই খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়।

তিল বীজ ও মেথি

এই দুটি উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খুবই কার্যকর। তিল বীজ গুঁড়া করে আটা বা ময়দার সাথে মিশিয়ে রুটি বানিয়ে খেতে পারেন।
সামান্য মেথি রাতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো পানি খেয়ে নিন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর হবে।

ত্রিফলার জুড়ি নেই

হরিতকী, আমলকী ও বহেড়া- এই তিনটি ফলকে বলা হয় ত্রিফলা। ত্রিফলার প্রচুর ঔষধি গুণ আছে। শরীরের নানা সমস্যায় ত্রিফলা ব্যবহার করার রেওয়াজ প্রাচীনকাল ধরেই চালু আছে। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধেও ত্রিফলা অত্যন্ত কার্যকর। ত্রিফলা গুঁড়া করে একটি বাতাসরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করুন। রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধ বা পানির সঙ্গে ১ চা চামচ ত্রিফলা গুঁড়া মিশিয়ে খেয়ে নিন। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।

খাওয়ার অনিয়ম, ভাজাপোড়া বেশি খাওয়া, অপর্যাপ্ত ঘুম, পানি কম খাওয়াসহ নানা কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। এই সমস্যায় ওষুধের চেয়ে সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি বেছে নেওয়াই ভালো। তাতে কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই সুস্থ থাকা যায়। তবে গর্ভবতী নারী ও অন্যান্য শরীরিক সমস্যা থাকলে এই খাবারগুলো খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সারাবাংলা/এসবিডিই

Scroll to Top