‘৪ মাস ধরে বেতন পাই না, মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি’ | চ্যানেল আই অনলাইন

‘৪ মাস ধরে বেতন পাই না, মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি’ | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

‘আজ প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা বেতন পাচ্ছি না, ফলে আমাদের পরিবার-পরিজনসহ মানবেতর জীবনযাপন করছি’-বলছিলেন কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স এন্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের আন্দোলনরত এক কর্মজীবি।

২৭ এপ্রিল (রোববার) সকাল থেকে শুরু হওয়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ের আন্দোলন আজ তৃতীয় দিনে রূপ নিয়েছে আমরণ অনশন কর্মসূচীতে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন ভবনের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করছে কোভিডকালীন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া যোদ্ধারা। ইতোমধ্যে মহাখালীর জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চারজন কর্মীকে ভর্তি করা হয়েছে। দুই তিনজনকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভবনের নীচেই স্যালাইনরত অবস্থায় দেখা যায়।

‘‘যখন তোমায় ফেলে গিয়েছিল স্বজন, সেবা দিতে আমরাই ছিলাম আপন।’’; ‘‘মহামারির দুর্দিনে আমরা ছিলাম রাহবার, এখন কেন আমাদের এই হাহাকার।’’; ‘‘কোভিডকালে আমরা ছিলাম কাণ্ডারি হয় ফাঁসি দাও, নাহয় চাকুরী করো স্থায়ী।’’ এমন নানান প্ল্যাকার্ড হাতে আন্দোলনরতদের দেখা যায়।

আন্দোলনকারীদের দাবি, বর্তমানে দেশের ৩০টি হাসপাতালের আইসিইউ ও বিভিন্ন জেলার মলিকিউলার ল্যাবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে এ প্রকল্পে কর্মরত রয়েছেন ১ হাজার ৪ জন। এদের লিখিতভাবে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরি স্থায়ীকরণ এবং বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে হবে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

আন্দোলনরত কর্মী আলী আকবর বলেন, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পের অর্থায়ন শেষ হলেও ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৫ম এইচপিএনএসপি’র আওতায় প্রকল্প চলমান রাখার বিষয়ে প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মৌখিক নির্দেশনায় আমরা নিরবিচারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আজ প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন, চুক্তিবা বেতন পাচ্ছি না, ফলে আমাদের পরিবার-পরিজনসহ মানবেতর জীবনযাপন করছি।

আরেক কর্মী চয়ন বিশ্বাস বলেন, করোনাকালীন সময়ে আমরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকেই ৩ থেকে ৪ বার আক্রান্ত হয়েছি। প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হওয়া ছাড়াও, এখন আমরা অনেকেই পোস্ট-কোভিড জটিলতায় ভুগছি, যা আমাদের কর্মজীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। এই বিষয়ে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বা দাযিত্বশীলআচরণ দেখা যায়নি।

রাখি আওয়াল বলেন, গত রোববার থেকে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করলেও কর্তৃপক্ষ তেমন কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় আজ থেকে আমরা শান্তিপূর্ণ আমরন অনশণ কর্মসূচী পালন করছি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবু জাফর চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় স্বাস্থ্যসেবা, বিশেষ করে কোভিড পরীক্ষার জন্য সরকার স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়োগ দিয়েছিল সরকার। কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যান্ডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ পেয়েছিলেন তারা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই অপারেশন প্ল্যান (ওপি) বা বিষয়ভিত্তিক পরিকল্পনা গেল বছরের ডিসেম্বরে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এখানে অধিদপ্তরের করণীয় কিছু নেই।

কর্মীদের বকেয়া বেতনের বিষয়ে মহাপরিচালক বলেনম, আমরা আমাদের এই কর্মীদের বকেয়া বেতন ভাতা ও মানবিক দিকে বিবেচনায় রেখে অর্থ মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি অবগত করেছি। তবে এখনও তাদের পক্ষ থেকে কোনো জবাব পাই নাই। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

Scroll to Top