মস্কো, ২৩ মার্চ – রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে কনসার্ট হলে সংঘটিত ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএসআইএস-কে নামক ইসলামিক স্টেটের (আইএস)-এর একটি শাখা সংগঠন। হামলায় এ পর্যন্ত ৬০ জনের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। সেইসঙ্গে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৪৫ জন মানুষ।
সিএনএন, রয়টার্সসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, মস্কোতে ঘটে যাওয়া এ হামলার ব্যাপারে সপ্তাহ দু-এক আগেই আভাস মিলেছিল রাশিয়ার মার্কিন দূতাবাসের এক সতর্কবার্তায়।
রাশিয়ার গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে ঘটে এ হামলার ঘটনা। এ সময় একদল বন্দুকধারী জনাকীর্ণ কনসার্ট হলে ঢুকে তাদের স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়।
রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের তথ্যমতে, হামলাকারীরা কনসার্ট হলে ঢুকে একটি গ্রেনেডেরও বিস্ফোরণ ঘটায়, যাতে ভবনের ছাদে আগুন ধরে যায়। এরপর একটি সাদা রেনল্ট গাড়িতে করে পালিয়ে যায় তারা।
৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তৎপরতা চালানোর পর নিয়ন্ত্রণে আসে ওই আগুন। কিন্তু আগুনে আংশিকভাবে ধসে পড়ে হলের ছাদ।
এ ঘটনাকে ‘রক্তাক্ত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা ছিল এটি।
এদিকে সপ্তাহ দুয়েক আগেই রাশিয়ায় হামলা হতে পারে বলে আভাস দিয়েছিল দেশটির মার্কিন দূতাবাস। ৭ মার্চ রাশিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের জন্য একটি নিরাপত্তা সতর্কতা জারি করা হয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়, মস্কোয় বড় জমায়েতে উগ্রপন্থীদের হামলার পরিকল্পনার খবর জানা গেছে। বড় জমায়েতের মধ্যে কনসার্টের কথাও বলা হয়েছিল এ সতর্কবার্তায়। এজন্য মার্কিন নাগরিকদের বড় জমায়েত এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল এতে।
এছাড়া এক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে আইএসআইএস-কে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিগত কয়েক বছরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ইসলামিক স্টেট। তারা বারবার পুতিনের সমালোচনা করেছে। এছাড়া মুসলিমদের বিরোধিতায় বিভিন্ন কার্যক্রমে রাশিয়ার অংশগ্রহণও ভালো চোখে দেখে না আইএস।
কারা এই আইএসআইএস-কে?
মস্কোতে হামলার ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে একটি পোস্টে দায় স্বীকার করে আইএসআইএস-কে। আইএসের এই শাখার পুরো নাম ইসলামিক স্টেট খোরাসান। ২০১৪ সালের দিকে সংগঠনটির উত্থান ঘটে এবং নৃশংস একটি দল হিসেবে তারা কুখ্যাত হয়ে ওঠে। তবে ২০১৮ সালের পর থেকে তাদের সদস্য সংখ্যা কমে এসেছে।
আফগানিস্তানের ভেতরে, বাইরে, মসজিদ এবং অন্যান্য স্থাপনায় হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট খোরাসানের কুখ্যাতি রয়েছে। এ বছরের শুরুর দিকে জানা যায়, ইরানে জোড়া বোমা হামলায় প্রায় ১০০ মানুষের মৃত্যুর পেছনে দায়ী ছিল আইএসের এই শাখাটি।
এ ছাড়া ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কাবুলে রাশিয়ার দূতাবাসে হামলা ও ২০২১ সালে কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হামলার জন্যও দায়ী তারা।
সূত্র: আরটিভি নিউজ
আইএ/ ২৩ মার্চ ২০২৪