হঠাৎ করে মাথা ঘুরলে যা করবেন – DesheBideshe

হঠাৎ করে মাথা ঘুরলে যা করবেন – DesheBideshe

হঠাৎ করে মাথা ঘোরানোর সমস্যা আমাদের সবারই কমবেশি হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে মাথা ঘুরতে পারে। যখন আপনি মাথা ঘোরা অনুভব করবেন তখন স্থির হয়ে যাবেন। সে সময় কোনোভাবেই হাঁটাচলার চেষ্টা করবেন না, এতে বিপদ হতে পারে।

আমাদের শরীরের স্বাভাবিক ভারসাম্য নির্ভর করে দৈনন্দিন কাজকর্মের ওপর। যখন আমরা আমাদের শরীরের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করি, তখন শরীরে অনেকটা চাপ পড়ে। আর তখনই শরীর অস্বাভাবিক আচরণ করে। তার মধ্যে একটি হলো মাথা ঘোরানো।

আমাদের মস্তিষ্কের ভেতরে বিশেষ কেন্দ্রগুলো যখন সঠিক সংকেত পাঠায়, তখন আমাদের শরীর ঠিকমতো কাজ করে। কিন্তু যখন কেন্দ্রগুলোর কোনো একটি আঘাত বা বাধা পায়, তখনই মূলত মাথা ঘোরা শুরু হয়।

মাথা ঘোরার কারণ
বিভিন্ন কারণে মাথা ঘুরতে পারে। এর মধ্যে সম্ভাব্য কারণ হলো—

– অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে

– দুশ্চিন্তা করলে

– ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হতে পারে

– অন্তঃকর্ণের রক্তনালির অস্বাভাবিকতা থাকলে

– অন্তঃকর্ণের প্রদাহ থাকলে

– মেনিয়ারস রোগ থাকলে

– অস্বাভাবিক দৃষ্টিগত সমস্যার জন্য হতে পারে। যেমন : অনেক উঁচুতে উঠে নিচের দিকে তাকালে এবং চলন্ত ট্রেন বা গাড়ি থেকে প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালে মাথা ঘোরে।

– অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থাকলে

– ঘাড়ের রক্তনালিতে বাধা বা রক্ত সরবরাহে ত্রুটি হলে

– মস্তিষ্কের নিচের দিকে টিউমার হলে

– মাল্টিপল স্লেরসিস রোগ থাকলে

– ভাইরাসজনিত ভেস্টিবুলার নিউরাইটিস হলে

– মধ্যবয়সীদের মেনিয়ারস রোগ থাকলে

– আঘাতের কারণে পেট্রাস হাড়ের ক্ষতি হলে

– রক্তে চিনির মাত্রা কমে গেলে

– শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে
হঠাৎ মাথা ঘুরলে যা করবেন
আপনার যদি হঠাৎ করে মাথা ঘোরায়, তাহলে আপনি যে কাজটি করছেন, সেটি বাদ দিন। এরপর চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। দুই চোখ বন্ধ করে সহজভাবে শ্বাস নিন। এ সময় কোনোভাবেই ওঠার চেষ্টা করবেন না। কেননা এমন সময় মারাত্মক কোনো দুর্ঘটনা হতে পারে।

মাথা ঘোরা প্রতিরোধে যা করবেন
মাথা ঘোরা প্রতিরোধে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলতে পারেন—

দুশ্চিন্তা করবেন না
বর্তমান সময়ে আমাদের সবার জীবনেই মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা রয়েছে। তবে এগুলোকে কোনোভাবেই বাড়তে দেওয়া যাবে না। অনেকেই তাদের ফুসফুসে অতিরিক্ত চাপ দেয় এবং খুব দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে শুরু করে। ফলে মাথা ঘুরতে পারে। তাই এটি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সেই সঙ্গে ধীরে ধীরে নিয়মিতভাবে শ্বাস নিতে হবে।

ঘাড় সোজা রাখা
অনেক ক্ষেত্রে ঘাড় সোজা না রাখার কারণে মাথা ঘুরতে পারে। কারণ, ঘাড়ে স্পনডাইলোসিসের পরিবর্তন না হলে মস্তিষ্ক রক্ত সরবরাহকারী ধমনিগুলোর ওপর চাপ পড়তে পারে। ফলে মাথা ঘোরা শুরু হতে পারে। তাই ঘাড়ের সঠিক অবস্থান এটিকে প্রতিরোধ করতে পারে এবং ঘাড়ে মাংসপেশিকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।

অতিরিক্ত পরিশ্রম না করা
আমরা অনেকেই শরীরের ওপর অনেক প্রেশার দিই। এর ফলে আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি ডেকে আনছি। কোনো অবস্থাতেই এটি করা যাবে না। শরীরের ওপর অতিরিক্ত চাপ দিলে অনেক সময় মাথা ঘোরার মতো অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। তাই কোনো কাজ করতে হলে আগে থেকে সেটির পরিকল্পনা করতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

সুগারের মাত্রা না কমানো
কোনো অবস্থাতেই শরীরে সুগারের মাত্রা কমানো যাবে না। অনেক সময় এমন হয় যে একটা কাজ করতে করতে সময় চলে যাচ্ছে, কিন্তু খাচ্ছেন না। আবার অনেক সময় অলসতা করেও সঠিক সময়ে খাবার খাচ্ছেন না। এতে করে রক্তে চিনির মাত্রা কমে যায়। তখনই মাথা ঘোরার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়। তাই অলসতা না করে সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করুন।

পর্যাপ্ত পানি পান করা
নানা ধরনের কাজ করার সময় আমরা ঘেমে যাই। এতে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। আর শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেয়। তাই শরীর যেন পানিশূন্য হয়ে না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এতে শরীর সব সময় পানিপূর্ণ থাকবে।

মাথা ঘোরা অবহেলা করবেন না
মাথা ঘোরার সমস্যাকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। যদি এ সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। ঠিক কী কারণে এমনটি হচ্ছে, সেটি নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা নিলে মাথা ঘোরার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।

আইএ

Scroll to Top