স্তন ক্যান্সার মোকাবেলায় খেলাধুলার ভূমিকা | চ্যানেল আই অনলাইন

স্তন ক্যান্সার মোকাবেলায় খেলাধুলার ভূমিকা | চ্যানেল আই অনলাইন

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

সূত্র: ডয়েচে ভেলে 

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য মনের জোর জরুরি। সেইসঙ্গে খেলাধুলাও কিছু ক্ষেত্রে অভাবনীয় ফল দিতে পারে। ব্রেস্ট ক্যানসারের এক রোগী ‘স্ট্রেনথ অ্যান্ড এন্ডুরেন্স ট্রেনিং’ করে দারুণ সুফল পাচ্ছেন।

আচমকা স্তনে একটি পিণ্ড ধরা পড়লো৷ জানা গেল ক্যান্সার হয়েছে। আনে ম্যুলার সবে প্রথম বারের জন্য মা হয়েছেন। ফলে এমন খবরের জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেননা।

দ্রুত জানা গেল, যে তার একটা অপারেশন ও কেমোথেরাপির প্রয়োজন। দুটোতেই বেশ ধকল হলেও তার সামনে অন্য কোনো পথ খোলা ছিলনা। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আনে বলেন, প্রথমেই মনে হলো, আমি আর বাঁচবোনা। আমার মেয়েকে বড় হতে দেখবোনা। প্রায়ই এখানে বসে ভাবতাম সেরে ওঠার জন্য আর কী করতে পারি? মোটকথা আবার সুস্থ হওয়ার লক্ষ্যই ছিল আসল কথা৷ তার জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত ছিলাম।

GOVT

৩৪ বছর বয়সি এই নারী এক অনকোলজিকাল ট্রেনিং এবং ব্যায়াম থেরাপি সম্পর্কে জানতে পেরে অবিলম্বে সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে চেয়েছিলেন। তাঁর ডাক্তার হিসেবে মারেন প্যোসডর্ফও সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন৷ মারেন বলেন, খেলাধুলার এক মৌলিক নিরাময় ক্ষমতা রয়েছে৷ কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সাক্ষাৎ প্রমাণও পাওয়া গেছে। শরীরের উপর খেলাধুলার প্রভাব নিয়ে একাধিক গবেষণা হয়েছে৷ যথেষ্ট প্রভাবের কথা জানা গেছে। আমরা দেখেছি, নারীদের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কমে যায়৷ বমি বমি ভাব কমে, হাড় ও জয়েন্টের ব্যথাও কম হয়। সেটা স্পষ্ট দেখা গেছে।

আনে ম্যুলার কেমোথেরাপির মাঝেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করেন৷ বিশেষ এক ফিজিওথেরাপি চেম্বারে তিনি সপ্তাহে দুইদিন ‘স্ট্রেনথ অ্যান্ড এন্ডুরেন্স ট্রেনিং’ করতে থাকেন।

ক্রীড়াবিজ্ঞানীরা আনে-কে উত্সাহ দিয়েছিলেন৷ ক্যানসারের চিকিৎসার সময়ে হাতে-পায়ে যেমন ব্যথা করে, এই থেরাপির ফলে সেই পলিনিউরোপ্যাথি নামের সমস্যা আদৌ দেখাই দেবেনা বলে আশা করেছিলেন তারা। ক্রীড়াবিজ্ঞানী হিসেবে ডিয়র্ক বিয়ারমান বলেন, গবেষণায় স্পষ্ট দেখা গেছে, যে এর ফলে কষ্ট কিছুটা কমে যায়৷ কেমোথেরাপি বন্ধ করার অন্যতম প্রধান কারণ এই পলিনিউরোপ্যাথি। যতকাল কেমোথেরাপি চালিয়ে যাওয়া যায়, সেটা রোগীদের জন্য ভাল।৷ থেমে গেলে অবনতি হয়৷ আমি সেটা এভাবেই দেখি৷ শরীরের যে সব কাঠামো আমরা ট্রেনিং বা সঞ্চালন করি না, সেগুলির আবার অবনতি ঘটে।

অর্থাৎ ক্যান্সারের সময়ে খেলাধুলা বন্ধ করা একেবারেই ভালো কাজ নয় বলে ডিয়র্ক বিয়ারমান মনে করেন।

ইতোমধ্যে আনে ম্যুলারের মেয়ে ইয়েটের এক বছর বয়স হয়েছে৷ আনে তার মেয়ে ও জীবনসঙ্গীর জন্য উপস্থিত রয়েছেন৷ খেলাধুলা তাকে সেই শক্তি দিচ্ছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন৷ তিনি বলেন, খুবই ভালো৷ আমি খুব ভালো বোধ করছি৷ সুস্থ আছি। শক্তি পাচ্ছি৷ এর থেকে ভালো আর বোধহয় কিছুই হতে পারে না।

আনের পোস্ট-ট্রিটমেন্ট এখনো চলছে। কয়েক মাস পর পর তাকে ডাক্তারের কাছে চেকআপের জন্য যেতে হচ্ছে। তিনি অবশ্যই নিজের ও নিজের পরিবারের স্বার্থে ‘স্ট্রেনথ অ্যান্ড এন্ডুয়রেন্স ট্রেনিং’ চালিয়ে যেতে চান।

Chokroanimation

Scroll to Top