পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগণনার ফলাফলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি এখনও। তার আগেই হাত মেলানোর কথা ঘোষণা করল নওয়াজ শরিফের দল পিএমএলএন এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পিপিপি। এই জোট গড়ার ফলে পার্লামেন্টের নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পাবেন তারা। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও এই জোটের কাছে হেরে যাচ্ছেন ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, আজ (১০ ফেব্রুয়ারি) শনিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ২ দল ভোট-পরবর্তী জোটের ঘোষণা করেছে। এর আগে বিলাওয়ালের বাবা পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এবং নওয়াজ শরিফ শুক্রবার রাতে ভোটগণনার প্রবণতার আঁচ মেলার পর বৈঠকে বসেছিলেন।
জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে জোট
পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে এখন মোট আসন সংখ্যা ৩৩৬টি। কিন্তু তার মধ্যে সরাসরি ভোট হওয়ার কথা ছিল ২৬৬টি আসনে। কিন্তু এক প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ২৬৫টি আসনে ভোট হয়েছে। বাকি ৭০টি আসন মহিলা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে। এর মধ্যে মহিলাদের জন্য ৬০টি এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ১০টি আসন। সংবিধান অনুযায়ী সরাসরি ভোটে যে দল যে সংখ্যক আসনে জয় পাবে, সেই অনুপাতে ওই সংরক্ষিত আসনগুলিতে প্রতিনিধি ঠিক করে দলগুলো।
যদিও এই সংরক্ষিত আসনগুলোর ওপর সরকার গঠন নির্ভর করে না। সেই হিসাব হবে সংরক্ষিত বাদ দিয়ে ২৬৫টি আসনের মধ্যে। সেই অর্থে বর্তমান পরিস্থিতিতে ১৩৩ জন জয়ীর সমর্থন পেলেই পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সম্ভব হবে। এখন পর্যন্ত পিএমএলএন ৭১ এবং পিপিপি ৫৩টিতে জিতেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত নির্দলীয় ৯১ এবং নির্দলীয় ও অন্যেরা এখনও পর্যন্ত ৩৫ আসনে জয়ী হয়েছেন।
অর্থাৎ, সংখ্যাগরিষ্ঠতার দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে জোট। এছাড়া নির্দলীয় এবং জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলামের মতো কট্টরপন্থী কয়েকটি দলের সমর্থনও তারা পেতে পারে। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ‘রাজনৈতিক দল’ হিসেবে পিটিআই-এর স্বীকৃতি বাতিল করায় তারা সরাসরি ভোটের ময়দানে নেই। কিন্তু ইমরান খানের দলের অনেক নেতাই নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ফল বলছে, এখনও পর্যন্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে নির্দলীয়রা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
জেলবন্দি ইমরান খানের বিজয়ভাষণ
নির্দলীয় প্রার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর ২টি ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জেলবন্দি ইমরান খান আজ সকালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে বিজয়ভাষণও দেন। তিনি বলেন, নওয়াজ শরিফের ‘লন্ডন পরিকল্পনা’ ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তানের জনতা আমাদের বিপুলভাবে সমর্থন করছে। আপনারা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন। এবার তা রক্ষার দায় আপনাদেরই।বিশ্বকাপজয়ী দেশটির সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক সরাসরি কিছু না বললেও তার টিমের অভিযোগ, শেষ বেলায় পরিস্থিতি প্রতিকূল বুঝে শরিফ-সমর্থক সেনারা বেশ কিছু আসনে ভোটে ফল বদলে দিতে সক্রিয় হবে।