সুফিয়া কামালের প্রথম ছবি

সুফিয়া কামালের প্রথম ছবি

পত্রিকায় ছবি ছাপানের জন্য সুফিয়াকে কোনো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়নি। তবে কবিতা লেখার কারণে তাঁকে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল। তাঁর আত্মীয়রা এটিকে কাব্য হিসেবে না নিয়ে ব্যক্তিগত জীবনের কাহিনি বলে বিবেচনায় নেন। কবিতার যে যে অংশে দুঃখ ও বেদনার কথা আছে, তা সুফিয়ার ব্যক্তিগত দুঃখকষ্ট মনে করে পরিবারের লোকজন বলাবলি করতে লাগলেন, আমরা সুফিয়াকে কোন বিড়ম্বনার মধ্যে ফেলেছি, কিংবা কী এমন কষ্ট দিয়েছি যে তাঁকে এ ধরনের কবিতা লিখতে হলো!

নাসিরউদ্দীনের লেখার সূত্র ধরেই আমি আলোকচিত্রী সি. গুহকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। সিদ্ধার্থ ঘোষের ‘ছবি তোলা: বাঙালির ফোটোগ্রাফি-চর্চা’ বইয়ে তাঁর সম্পর্কে সামান্য তথ্য পাই। জানতে পারি তাঁর পুরো নাম চারুচন্দ্র গুহ [২৪ এপ্রিল, ১৮৮৪-৩ নভেম্বর ১৯৫৭]। এরপর ২০০৭ সালে ‘চারু গুহ: জীবন ও আলোকচিত্র’ নামের যে সংকলনটি প্রকাশিত হয়, সেটি আমাকে পাঠান গবেষক তারেক আজিজ। ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া চারু গুহর পৈতৃক বাড়ি বরিশালে আর নানাবাড়ি বিক্রমপুরের হাঁসাড়ায়। যে কয়েকজন পথিকৃতের হাত ধরে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে স্টুডিও ফটোগ্রাফির গোড়াপত্তন হয়, চারু গুহ তাঁদের অন্যতম। ১৯০৮ সালে ঢাকার সদরঘাটের কাছে তিনি একটি স্টুডিও স্থাপন করেছিলেন। এর আগে ঢাকায় দুটি স্টুডিও ছিল। একটি ‘ক্যাপ ফ্রিৎস ফটোস’, আরেকটি ‘বেঙ্গল স্টুডিও’। ১৯১৬ সাল পর্যন্ত ঢাকায় ছিলেন চারু। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিরূপ পরিস্থিতিতে তিনি আর স্টুডিওটি চালিয়ে রাখতে পারলেন না। ব্যবসা গুটিয়ে চলে গেলেন কলকাতায়। সেই থেকে নিজের দেশেই পুরোপুরি বিস্মৃত স্টুডিও ফটোগ্রাফির এই পথিকৃৎ!

Scroll to Top