শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের বড় কূটনৈতিক দ্বিধা

শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের বড় কূটনৈতিক দ্বিধা

এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘটনাগুলোর চমকপ্রদ মোড় ভারতকে অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতিতে ফেলেছে। গতকাল রাতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের ঘটনা দিল্লির জন্য ব্যাপক কৌশলগত প্রভাব ফেলবে বলে আলোচনা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এখনও প্রকাশ্যে জানায়নি তারা কীভাবে এই প্রতিবেশী সঙ্কটকে মোকাবেলা করবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন সঙ্কটে কেমন পরিকল্পনা করছে তাও স্পষ্ট করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আজ একটি সর্বদলীয় বৈঠকে সাংসদদের ব্রিফ করেন।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভারতের জন্য কেন কঠিন!
অশান্তিতে ঢাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা দিল্লির হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন এবং রাজনৈতিক আশ্রয় চাইতে আজ যুক্তরাজ্যে উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, যুক্তরাজ্য তাকে আশ্রয় দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনো নিশ্চিতকরণ নেই, তাই যুক্তরাজ্য তাকে সবুজ সংকেত না দিলে কী হবে তা পরিষ্কার নয়।

বাংলাদেশের পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায়, লন্ডন শুধুমাত্র জাতিসংঘের নেতৃত্বে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে কিন্তু আশ্রয় ইস্যুতে কোনো বার্তা দেয়নি। এখন প্রশ্ন হলো, শেখ হাসিনা ভারতে থাকবেন নাকি অন্য গন্তব্য খুঁজবেন।

ভারত এখন একটি কূটনৈতিক সংশয়ের সম্মুখীন। সুতরাং বহিষ্কৃত নেতাকে প্রকাশ্যে সমর্থন হিসেবে দেখতে চায় না। কারণ এটি বাংলাদেশের নতুন ব্যবস্থার সাথে তার সম্পর্ককে জটিল করে তুলতে পারে। ভারতের সাথে শেখ হাসিনার সম্পর্কের ইতিহাসও গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগে, বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের অস্থিরতার সময়, তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পুরো পরিবারকে হত্যা করার পর ইন্দিরা গান্ধী সরকার তাকে আশ্রয় দিয়েছিল। তাই এই মুহূর্তে তাকে ত্যাগ করাও সহজ সিদ্ধান্ত হবে না।

উদ্বাস্তু আগমনের ভয়
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার রিপোর্টের মধ্যে ভারতের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হল নৃশংসতা থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের একটি বড় আকারের আগমন। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চার হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশী উদ্বাস্তুদের আগমন একটি মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গতকাল বাংলাদেশের ঘটনাবলীর পর, সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (বিএসএফ) আন্তর্জাতিক সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। ত্রিপুরার টিপরা মোথার নেতা প্রদ্যোত কিশোর মাণিক্য দেববর্মা বলেন, তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে কথা বলেছেন এবং তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, যেকোন অনুপ্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

Scroll to Top