লাইফস্টাইল ডেস্ক
শীতে বা শীতের শেষে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। শীত মৌসুমে সক্রিয় হয় এমন ভাইরাসবাহী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালেও ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই মৌসুমে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় বলেই এই সংখ্যা বাড়ছে।
রাজধানীর শিশু হাসপাতাল থেকে বুধবার পাওয়া তথ্যমতে, এর আগের ২৪ ঘন্টায় ওই হাসপাতালে অর্ধশতাধিক শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। আইসিডিডিআরবিতে (আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) গত ২৫ থেকে ২৮ জানুয়ারির তথ্যে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এখানে প্রতিদিন ভর্তি হওয়ার রোগীর সংখ্যা ২০০ থেকে ৩০০জন। যাদের অধিকাংশই শিশু। এছাড়াও দেশের উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশি হওয়ায় সে অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুদের ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বাড়ছে।
মীতে বা শীত শেষের এই সময়ে শিশুর ডায়রিয়া বিষয়ে চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ সারাবাংলাকে বলেন বলেন, রোটা ভাইরাস খাবারের সঙ্গে পেটে গেলে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। সময়মতো চিহ্নিত করতে না পারলে বা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই চিকিৎসক আরও জানান, অনেকেই শীতে শিশুর অসুস্থতা বলতে নিউমোনিয়াকে বোঝেন। তবে এখন ডায়রিয়ার প্রকোপও রয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকেও এ ধরনের খবর এসেছে। তবে এতে আতংকের কিছু নেই।
শীতের শেষে শিশুর ডায়রিয়া নিয়ে আইসিডিআরবি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. প্রদীপ কে. বর্ধন বাংলানিউজকে বলেন, স্বাভাবিকভাবেই এই সময়ে সাধারণত শিশুরা ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়। গ্রীষ্ম বা বর্ষায় ডায়রিয়ার কারণ থাকে ব্যাকটেরিয়া। আর আমাদের দেশে শীতকালে রোটা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এটা মুখের মধ্য দিয়েই শিশুদের পাকস্থলীতে যায়। বড়দের ক্ষেত্রে রোটা খুব একটা দূর্বল করতে পারে না। তবে শিশুরা যথাসময়ে চিকিৎসা না পেলে মারাও যেতে পারে। এই সময়ে শিশু কি খাচ্ছে, মুখে আঙ্গুল দিচ্ছে কিনা সেটি খেয়াল রাখতে আর বাইরে থেকে কেনা খাবার না খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।
ডা. প্রদীপ কে. বর্ধন এই ডায়রিয়া প্রতিরোধের কিছু উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। রোটা ভাইরাস প্রতিরোধে মায়ের দুধ কার্যকর বলে জানান তিনি। বলেন, যেসব শিশু ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খায়, তাদের ঝুঁকি অনেক কম থাকে। এছাড়া ডায়রিয়া হলে শিশুর স্বাভাবিক খাবার বন্ধ করা যাবে না। এর ফলে শিশু আরো বেশি দূর্বল হয়ে পড়ে আর ঝুঁকি বেড়ে যায়। তিনি আরও জানান, শিশুর প্রথমবার পাতলা পায়খানা হলেই তাকে স্যালাইন খেতে দিতে হবে। এবং অবস্থার উন্নতি না হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সারাবাংলা/এসবিডিই